পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৪৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহয়তলী যশোদা একেবারেই বোঝে না, তবু তার সহজবুদ্ধিতেই সে বুঝিতে পারে, এবারকার লড়াইট একেবারে অর্থহীন, জগতে কারও এতে কোন উপকার इश्व ना । যোগমায়ার মনটা খারাপ হইয়া গেল বীভৎস রকমের । তার রকমসকম দেখিয়া যশোদাও ভড়কাইয়া গেল। কোন বিষয়ে ভড়কাইয়া যাওয়া যশোদার বড় অপছন্দ । বিরক্ত হইয়া যোগমায়াকে একেবারে সে আচ্ছা করিয়া ধমকাইয়া দিল, তারপর অনেক আদর করিল, তারপর নিজের বিষাদের স্বপ্ন ঝাড়িয়া ফেলার মত মাথা ঝাকি দিয়া বলিল, “কি মন খারাপ করে আছি আমরা সবাই মিছিমিছি। বাড়ীতে যেন মড়া জমেছে ক?”গণ্ড । এসে তো বাছা সবাই মিলে একটু ফুৰ্ত্তি করি আজ। কি করা যায় বল তো ?” সুব্রতাই ভাবিয়া চিন্তিয়া বলিল, “সিনেমায় যাবে দিদি সবাই মিলে ?” সিনেমা-থিয়েটার যাওয়া ছাড়া ফুৰ্ত্তি করার আর কোন উপায়ের কথা সুব্রতার एन्न ङ८छ् दिनं ८न् | যশোদা না ভাবিয়াই বলিল, “তাই চল ।” সহরতলীতে থাকিয়াও কতকাল যশোদা সিনেমায় যায় নাই তার নিজেরও মনে নাই। নন্দ আর সুবৰ্ণকে পর্দায় দেখিতে যাওয়ার ইচ্ছাটা আজকাল জোরালো হইয়া উঠিয়াছিল, যাই-যাই করিয়াও এতদিন যাওয়া হয় নাই। ভাবপ্রবণ ব্যাকুলতাকে যশোদা বড় ভয় করে। নন্দকে পর্দায় নড়িয়া চড়িয়া কথা বলিতে দেখিলে আর তার গান শুনিলে হয়তো সে ব্যাকুল হইয়া পড়িবে। এই আশঙ্কাটা যশোদাকে আটকাইয়া দিয়াছিল। সাধ করিয়া ওরকম ব্যাকুল হইয়া লাভ কি-ও তো মদ খাইয়া মাতাল হওয়ার সামিল । আজ সে সুব্রতাকে বলিল, “সেই ছবিটা দেখতে যাব-সেই যে সেদিন দেখে এসে আমায় বল্পে, একটা ছেলে চমৎকার গান গায় ?” সুব্রতা বলিল, “সেটা তো আমি দেখেছি। একটা নতুন ছবি হচ্ছে, খুব ভাল বই, সেটা দেখবে চল ।” যশোদা বলিল, “না, ওই ছবিটা দেখব। এক ছবি দু’বার দেখলে তুমি মরবে না। ইচ্ছে না হয়, যে ও না ।”