সহরতলী চেনা লোকের চোখে পড়িয়া যাইবে, সত্যপ্রিয় চক্ৰবৰ্ত্তীর মেয়ে সে, কে না তাকে চেনে এপাড়ায় ? তাড়াতাড়ি নিজের ঘরে গিয়া যোগমায়া কাপড় ছাড়িয়া ফেলিতে আরম্ভ করিল। একটু পরে রওনা হওয়ার সময়েও তাকে ঘরের বাহির হইতে না দেখিয়া সুব্ৰতা ডাকিতে গেল । যোগমায়া বলিল, “আমি যাব না, যেতে ইচ্ছে করছে না। আমার।’ “কেন ? হঠাৎ তোমার কি হল, যাবার জন্য তৈরী হয়ে ?” “বললাম তো ইচ্ছে করছে না।” সুব্রতা মুখ ভার করিয়া ফিরিয়া আসিয়া খবর দিল, “ও যাবে না দিদি । কাপড়াচোপড় ছেড়ে বসে’ আছে।” তখন ব্যাপার বুঝিতে গেল যশোদা । মুখ ভার করিয়া যোগমায়া চৌকিতে বসিয়া আছে, বিনা দোষে কে যেন তাকে তিরস্কার করিয়াছে অনেক । “কি হ’ল। হঠাৎ যাবেনা কেন ?? “ভাল লাগছে না। যশোদা দিদি !” যশোদা একটু হাসিল, বলিল, “সেজেগুজে রওনা হওয়ার সময় হঠাৎ এরকম ভাল না লাগা তো ভাল কথা নয় । চলো, লোকে কিছু ভাববে না । যদি ভাবে তো ভাববে যে, আমরা তোমার চাকর-দাসী-তুমি কোথাকার রাজরাণীটাণী হবে, পাঁচ-সাতজন চাকর-দাসী নিয়ে বায়োস্কোপ দেখতে এসেছে ।” যোগমায়া চোখও তোলে নাই, আর কথাও বলে নাই। যশোদা গম্ভীর হইয়া বলিয়াছিল, “তার চেয়ে এক কাজ কর না ? সাদাসিদে একখানা কাপড় প’রে চলো, এ কাপড়টা তোলা থাক । আমাদের সঙ্গে একেবারে মিশে যাবে-মনের খুতখুতেনিটা যদি চাপতে পার কোনরকমে, “কি ফুক্তিটা হবে বলতো ?” পাশে বসিয়া যোগমায়াকে বুকে জড়াইয়া ধরিয়া বলিয়াছিল, “নতুন কিছু একটা করেই দ্যাখোন আমার কথায়-খেলা মনে করে করে দ্যাখে একবার ? সখি করে। সাদাসিদে একখানা শাড়ী পরিয়াই শেষে যোগমায়া দলে ভিড়িয়াছিল। 88
