পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৪৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भकि थंहब्ौ “দেখাই যাক না, হয় কি না হয় ।” “যদি হয়ও, রিলিফ চালাতে দোষ কি ? রিলিফ দিয়ে কতটুকু ঠেকানো যাবে।” “আমি ওতে নেই।” সুন্দর স্বাধীন জীবন । অলস, মন্থর, সরস। কোথাও নিয়ম নেই, বাধ্য-বাধকতা নেই, রাজকতা নেই। আর বেশী রোজগার দিয়ে তার কি হবে ? নেহাৎ দরকার হয়, সদরে চায়ের দোকান দিয়ে বসবে একটা । দেশের অবস্থা খারাপ বেশী খারাপ হয়েছে। সেটা অস্বীকার করবার উপায় নেই । সবাই যেন ८कमन) নিঝুম হয়ে গেছে, বিবৰ্ণ হয়ে গেছে সকলের মুখ । নন্দীদের মা সেদিন গলায় দড়ি দিয়ে মরেছে। পয়সা দিয়ে লোকে ভাতের ফ্যান। কিনছে-ফ্যান যারা চিরদিন নর্দমায় ফেলে দিত তাদের রোজগার হচ্ছে, দু’চার পয়সা । গাছের পাতা খেয়ে অনেকে বঁচবার চেষ্টা করছে। অনেকে আবার ও চেষ্টাটা করছে না খেয়েই। এসব গুরুতর কথা বৈকি, ভয়ঙ্কর কথা । তারক এসব কথা ভাবে। সবাই যা ভাবছে, সবাই যে বিষয়ে আলোচনা করছে—সেও সে কথা যতদূর সম্ভব ভাবে। দুরবস্থার ছাড়া ছাড়া চরম উদাহরণগুলি তাকে পীড়িত করে। বিধু খুড়োর বাড়িতে হঠাৎ ঢুকে পড়ে সেদিন সে কি অপ্ৰস্তুত হয়ে পড়েছিল। খুড়োর অত বড় সোমন্ত্ত মেয়েটা ছেড়া গামছায় গা ঢেকে পাটপাত বাছছিল, লাফিয়ে উঠে ঘরে ঢুকতে গিয়ে গামছাটি তার থেকে গিয়েছিল বাইরেই। ভাবলেও তারকের হাসি পায় । না, দুঃখ হয়। বুকের মধ্যে টনটন করে। দেশের তরুণী যুবতী মেয়েগুলির পর্যন্ত এ-দশা হয়েছে ? ঘরের দেয়ালে টাঙ্গানো ইস্তাহারের ভাষায় তার মন বলে ওঠে, যে দুঃশাসন আজ ঘরে ঘরে দ্রোপদীর- ••• এসব ভাবনার মধ্যে বৌ-এর ভাবনাটা বার বার আসা-যাওয়া করছে আজকাল । বৈচিত্ৰ্য বিশেষ কিছু না থাক, একটি লতাবৎ কোমলাঙ্গী সুন্দরী মেয়েকে সম্পূর্ণ নিজের আয়ত্তে পাবার কল্পনা বেশ রঙীন হয়ে উঠছে । মাঝে মাঝে সে একেবারে মসগুল হয়ে যায় । বেশী দিন কল্পনার খেলা নিয়ে থাকবার সুযোগ কিন্তু তারকের ভাগ্যে জুটল না । চৈত্র শেষ হয়ে বৈশাখ সুরু হতেই একদিন তার বিয়ে হয়ে গেল । সদরের একজন মোক্তারের মেয়ে। বেশ দেখতে। সবই যেন বেশ বৌটার। চলাফেরা ওঠা বসা বেশ, লিজা বেশ, আত্মসমৰ্পণ বেশ, ঠোঁট বেশ, ফিন্স ফিস কথা বেশ ।