পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৪৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

थडिविच রিকৃসার টুনটুন আওয়াজ তার কানে আসে। সারাদিন বাড়ির কথা, বৌয়ের ‘কথা তার একবারও মনে পড়ে নি, এখন চিন্তার ফাকে ফাকে পুরানো স্মৃতির মত, প্রাচীন স্বপ্নের মত, ওসব চিন্তা মনে ভেসে আসে। যেদিন খুলী বিকেলে ট্রেনে উঠে সকালে ওদের কাছে সে যেন আর ফিরতে পারবে না, একদিনে বহু যুগের ব্যবধান রচিত হয়ে গেছে। অন্ধকার ঘুমন্ত বাড়িতে তারক ভিড়ের সান্নিধ্য অনুভব করে । তার মহকুমা সহরে হাঙ্গার মার্চ করে যারা এসেছিল চারদিকের গা থেকে, যাদের উদারহীন কাকলি মুষ্টিতে ধরা যাবে মনে হয়েছিল, "তাদের ভিড় । ওদের ভবিষ্যৎ এ বাড়ির ঘরে ঘরে গাদাগাদি করে ঘুমিয়ে আছে,-ব্যারাকের সৈন্যের মত। মেয়েরা পৰ্যন্ত বইতে এসেছে সেই ভবিষ্যতের ভাৱ । অনুভুতিময় শ্রান্ত জাগরণ সিগারেটের পিপাসা জাগায়। মাথার নীচে পুটলী করা জামার পকেট খুঁজতে গিয়ে তারক থমকে যায়। স্প্রিং-এর গদীতে এলোমেলে ঢেউ তুলে সীতানাখ উঠে যাচ্ছে। খানিক পরেই মনোজিনীর চকিত কণ্ঠ কানে আসে । ‘সীতু! কি করছ তুমি ?” “আমি তোমায় ভালবাসি মনু- বৌদি।” একখানা কাপড় সংগ্ৰহ করে পুস্পদের খানিক তফাতে ঠিক জানালার নিচে পেতে মনোজিনী শুয়েছিল । তার গরম-বোধটা একটু বেশী ।। ঘরের গাঢ় অন্ধকারে জানালা দিয়ে আকাশের অতি ক্ষীণ চাদ। আর তারার আলো এসেছে । তারকের শরীরটা শক্ত হয়ে গেল । মন হয়ে গেল ভোতা । ওদের কি জানানো উচিত হবে সে জেগে আছে ? চুপি চুপি সে কি বাইরে পালাতে পারবে ওদের টের পেতে না দিয়ে ? কে জানে হয়তো খাট থেকে নামতে গেলেই পুস্প বা তার পাশের কোন মেয়ের গা সে মাড়িয়ে দেবে। না, পালাবার পথ তার নেই। শব্দ করার ক্ষমতাও তার নেই। জেগে থেকে তাকে অভিনয় করতে হবে ঘুমন্তের। হায়, জেল-খাটা তারককে কে মুক্তি দেবে এই ভয়ঙ্কর বন্দী দশা থেকে ! - তারপর তারক শুনতে পেল মনোজিনী বলছে, ‘ঘুমন্ত মানুষকে জাগিয়ে বলতে এসেছে ভালবাসো ? আচ্ছা বেশ, আমি শুনে রাখলাম। এবার শোবে যাও । কাল এবিষয়ে কথা কইব ।” ‘চুলোয় যাক কাল।” 09ከሆ$) voy