পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৫১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

H0 ইতস্তত করেছি । সংঘ এদিকে যেমন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কাৰ্যকলাপের মধ্যে বাংলার সর্বশ্রেষ্ঠ প্ৰগতিশীল প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা বজায় রেখে অগ্রসর হয়েছে, অন্যদিকে তেমনি এই দ্বিধাগ্ৰস্ততার পরিচয়ও দিয়ে এসেছে। দাঙ্গাহাঙ্গামা যখন প্ৰচণ্ডতম হয়ে দাঁড়ায়, তখন কিছুদিন ছাড়া সংঘ কোনদিনই নিক্রিয় থাকেনি। সংঘের সাধারণ নিয়মিত কাজের মধ্যে সোমেন চন্দ লাইব্রেরী ও পাঠাগার পরিচালনা, এবং বুধবারের বৈঠক বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । অন্যান্য বহু সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের আহবানে, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী বক্তা পাঠাবার ব্যবস্থাও সংঘ বরাবর করে এসেছে। দাঙ্গার সময়, সংঘের উদ্যোগে ও পরিচালনায় শিল্পী ও সাহিত্যিকদের বিরাট দাঙ্গা-বিরোধী অভিযান গঠন এবং শ্রমিকশ্রেণীর দাঙ্গা-বিরোধী চেতনাকে শিল্পে সাহিত্যে, চিত্র ও রচনার মধ্যে রূপায়ণ, এবং শিল্পী সাহিত্যিকদের ঐক্যবদ্ধ সভা ও শোভাযাত্রায় সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি দেওয়া, আমাদের সংঘের পক্ষেই সম্ভব ছিল। এই সময় (১৯৪৬) বঙ্গীয় সংস্কৃতি পরিষদ স্থাপনের প্রচেষ্টা করা হয়। অপর দিকে ১৯৪৭-এর পনেরোই আগস্ট ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে, সর্বদলীয় শিল্পী সাহিত্যিকদের সাংস্কৃতিক ঐক্যমূল্য দিতে বিরাট সভার অনুষ্ঠান করে, শ্রেণী:স্বার্থে বিভক্ত জগতে সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অবাস্তব ও অসম্ভব সর্বদলীয় ঐক্যের প্রতি মোহের পরিচয়ও ংঘ দিয়েছিল। সংস্কৃতির ক্ষেত্রে প্রগতি ও প্রতিক্রিয়ার দুটি বিরোধী ধারাও স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়ে উঠতে থাকে, রাজনীতির ক্ষেত্রে তথাকথিত স্বাধীনতা পাওয়া সম্পর্কে শ্রমিক ও জনসাধারণের মোহভঙ্গের প্রতিক্রিয়া শিল্প ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে এই দুটি ধারায় বিরোধী রূপ,-প্ৰগতিশীল ও প্ৰতিক্রিয়াশীল রূপ-প্ৰকট হয়ে ওঠে। “আর্ট ফর আর্টস সেক’-এর পন্থী শিল্পী ও সাহিত্যিকের নিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী কয়েকজন নামকরা ব্যক্তির সঙ্গে, সংঘের প্রগতিবাদী সভ্যদের মতের ংঘাত তীব্র হয়ে ওঠে। সংঘ দৃঢ়তার সঙ্গে এই ভ্রান্তমতের বিরোধিতা করে। প্রগতিবিরোধী এই সাহিত্যিকেরা সংঘ থেকে সরে গিয়ে সংঘকে তীব্ৰভাবে আক্রমণ করে নিন্দ ও মিথ্যা প্রচারের অভিযান শুরু করেন । প্রকৃতপক্ষে, প্ৰগতিবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির বিভিন্নি ‘সাংস্কৃতিক’ পত্রিকা এবং প্রতিক্রিয়াশীল লেখকদের সংগঠন এই সময় আমাদের সংঘের বিরুদ্ধে তীব্ৰ C