পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৫৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ශිඳHi সাহিত্যজগতের সঙ্গে কোনরকম যোগাযোগ না থাকলেও উপলব্ধি করেছিলাম যে, সাহিত্যের জগৎও মানুষেরই জগৎ, সংসারে সাধারণ নিয়মকানুন সাহিত্যের জগতে বিপরীত হয়ে যেতে পারে না। মোটামুটি ভালো এক গল্প লিখলে যে কোন সম্পাদক যে সেটা নিশ্চয় সাগ্রহে ছাপবেন এ বিষয়ে এমনই দৃঢ় ছিল আমার বিশ্বাস যে তখনকার সেরা তিনটি মাসিকের যে কোন একটিতে ছ’মাসের মধ্যে আমার গল্প বার করা নিয়ে বাজী রাখতে দ্বিধা জাগেনি । কবি মনের ঝোক নয়, ঔপন্যাসিকের প্রতীতি-যা আসে বাস্তব হিসাব নিকাশ থেকে। গল্পটা লেখার মধ্যে ছিল এই বাস্তব বিচার বিবেচনা, কি হয়। আর কি না হয় তার হিসাব । এর মধ্যে ও সন্ধান পাওয়া যাবে যে, ভবিষ্যৎ ঔপন্যাসিক একদিকে কিরকম নির্বিকার নিরপেক্ষভাবে বাস্তবতার সমগ্রতাকে ধরবার চেষ্টা করেন, অন্যদিকে তারই মধ্যে বজায় রেখে চলেন আবেগ অনুভূতির সততা-মোহহীন মমতাহীন বিশ্লেষণে সত্যকে যাচাই করে নিয়ে তার মধ্যে প্ৰাণের সঞ্চার করেন ( যার যেমন বিশ্লেষণ ও যার যেমন প্ৰাণ ! ) । প্ৰথমে হিসাব করেছিলাম কি ধরনের গল্প লিখবো। সবদিক দিয়ে নতুন ধরনের নিশ্চয় নয়। একেবারে আনাড়ি, হঠাৎ একদিন কলম ধরে নতুন টেকনিকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নতুন বিষয়ের গল্প খাড়া করা সম্ভবও নয়, বেশি “নতুনত্ব’ সম্পাদকের পছন্দ নাও হতে পারে। ভেবেচিন্তে স্থির করেছিলাম যে, রোমাণ্টিক গল্প লেখাই সবচেয়ে সহজ, এরকম গল্প জমে গেলে সম্পাদকেরও চট করে পছন্দ হয়ে যাবে। আদর্শ অপার্থিব প্রেমের জমকালো গল্প ফাঁদতে হবে । কিন্তু সমস্তটাই আজগুবি কল্পনা হলে তো গল্প জমবে না, বাস্তবের ভিত্তিও থাকা চাই গল্পের । কি হবে এই ভিত্তি ? কাহিনী যদি দাড় করাই প্ৰেমাত্মক অবাস্তর কল্পনার, গল্পের চরিত্রগুলিকে করতে হবে বাস্তব রক্ত-মাংসের মানুষ । অতিজানা অতিচেনা মানুষকে তাই করেছিলাম ‘অতসী মামী’র নায়ক নায়িকা । সত্যই চমৎকার বঁশি বাজাতেন চেনা মানুষটি, বেশি বাজালে মাঝে মাঝে সত্যই তঁর গলা দিয়ে রক্ত পড়তো এবং সত্যই তিনি ছিলেন আত্মভোলা খেয়ালী প্ৰকৃতির মানুষ । ভদ্রলোকের বঁশি বাজানো সত্যই অপছন্দ করতেন। তঁর স্ত্রী, মাঝে মাঝে কেঁদে কেটে অনর্থ করতেন । শুধু এটুকু নয়। সত্যই দু’জনে তঁরা একেবারে মশগুল ছিলেন পরস্পরকে wo