পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৫৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাণিক গ্ৰন্থাবলী যে পৃথিবীতে একমাত্ৰ সত্য ! আপনি আমি বেঁচে আছি। এটাই আশ্চৰ্য । আহা, ওখানে বসবেন না মশাই ৷” লোকটা মাথায় হাত দিয়া পথেই বসিতে যাইতেছিল, আমার অনুরোধে বসিল না । বলিল, “মেয়েটা পনেরো বছর ধরে পাগল হয়ে আছে, আপনাকে সেই থেকে খুঁজছি। দুৰ্গা দুৰ্গা, সব পরিশ্রম ব্যর্থ হল ।” বলিলাম, “তাই হয়। ওজন্য দুঃখ করবেন না । ষোলো বছর পরিশ্রম マリび奪 প্রিয়ার মন খুজে পেলাম না, আপনার তো মানুষ খোঁজার তুচ্ছ পরিশ্রম।” । লোকটাকে ফাকি দিবার জন্য নানা রাস্ত ঘুরিয়া বাড়ি ফিরিলাম। দেখি, শিলা আমার জন্য ময়দা মাখিতেছে। মুখখানি তার যেমন বিষন্ন তেমনি শান্ত । একগাল হাসিয়া বলিলাম, “আমি ভাবলাম তুই রাগ করেছিস, শিলা ।” সে মুখ কালো করিয়া বলিল, “খেতে দিচ্ছে, পরি৩ে দি গছ, রাগ আর কী করে করি দাদু।” আপনারা শুনিলেন ? খাইতে পরিতে দিই বলিয়া আমি যেন কত জোরখাটাই । জোর খাটাইতে পারলে আমার ভাবনা কি ছিল বলুন তো ? উপরে গিয়া শুইয়া পড়িলাম। আধঘণ্টা পরে ক্ষুধার তাগাদায় শিলাকে তাগাদ দিতে নিচে নামিয়া দেখি, সে তখনো লুচি ভাজিতেছে আর সলজে অদূরে দাড়ানো ভূপেনের প্রশ্নের জবাব দিতেছে। আমি বাড়ি না থাকিলে আমাকে ডাকিতে আসিয়া ছোড়া সদর হইতে শিলার সঙ্গে দুই-চার মিনিট কথা কহিয়া যায় সম্প্রতি ইহা জানিতে পারিয়াছিলাম, কিন্তু এ যে একেবারে অন্দরে চড়াও হওয়া ! আমাকে দেখিয়া দুজনেই খাসা লজ্জা পাইল। আমতা আমতা করিয়া ভূপেন বলিল, “আপনার সঙ্গে একটা কথা ছিল, দাদু।” “তা আমাকে ডাকলেই হত ।” বলিয়া সটান বৈঠকখানায় চলিয়া গেলাম। এমন স্পষ্ট ইঙ্গিতও কি ছোড়া বুঝিতে চায়। হাক দিয়া বাইরে ডাকিয়া আনিলাম, তবে শিলার সঙ্গে তার গল্প ফুৱাইল। বেহায়া । “কি কথা বলতে চাও শুনি ? চটপট বলে ।” মুখ লাল করিয়া কোনোমতে কথাটা বলিতেই চটিয়া উঠিলাম-“বটে। তা বিয়ে করে ওকে খাওয়াবে কি শুনি ? এম-এ ডিগ্রির ডিপ্লোমাখানা ?” ছোড়া ষে ইতিমধ্যে সাড়ে তিনশো টাকার চাকরি বাগাইয়া আট-ঘাট বাধিয়া C3