পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৫৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শৈলজ শিল্পী আসিয়াছে, আমি কি সে সংবাদ রাখি ? প্রথমটা বেশ ভাড়কাইয়া গেলাম, কিন্তু মুহুর্তে সামলাইয়া নিয়া বলিলাম, “তা হোক, তোমার সঙ্গে আমি ওর বিয়ে দেব না।” ‘কেন দাদু ?? “সে কৈফিয়ত তোমাকে দেব কেন হে বাপু ! বাধা আছে এইটুকু শুনে রাখে।” বলিয়া আমি ফের রাগিয়া আগুন হইয়া উঠিলাম। দিন চারেকের মধ্যে সমস্ত ব্যবস্থা করিয়া শিলাকে বলিলাম, তেল্পিী বঁধ শিলা, এখানকার বাস তুলতে হল ।” শিলা সজলচোখে বলিল, “কেন দাদু ?? বেশ তো আছি। এখানে ?” বেশ থাক। আর যাই থাক, পরের দিন জিনিসপত্র সব গাড়ির ছাদে চাপাইয়া শিলাকে ভিতরে বসাইলাম । কিছু ফেলিয়া গেলাম কি না দেখিতে পাঁচ মিনিটের জন্য বাড়ির ভিতরে গিয়াছি, ইহার মধ্যে ভুপেন আসিয়া গাড়ির সামনে দাড়াইয়াছে। শুষ্ক হাসিয়া বলিলাম, "ভুপেন যে। আমরা তো চললাম।” “একটা কথা শুনুন দাদু’ বলিয়া সে আমাকে একান্তে নিয়া গেল । “কোথায় যাচ্ছেন ? শিলাও জানে না বললে।” হাসিয়া বলিলাম, “কোথায় যে যাচ্ছি। আমিও জানি না হে। কোনো গুহাটুহায় আশ্রয় নেব ভাবছি।” এক মুকুত স্তন্ধ থাকিয়া ভূপেন বলিল, “আপনার মত কি কোনোদিন বদলাবে না, দাদু ? এ বিয়ে না হলে আপনার নাতনীও অসুখী হবে।’ গম্ভীর হইয়া বলিলাম, ‘দেখো বাপু কবি, তোমায় একটা সৎ উপদেশ দিই। শুধু কাব্যচর্চা করে জীবনটা মাটি কোরো না। জীবনে আরও ঢের বড়ো বড়ো সাধনার সুযোগ আছে।” বলিয়া গাড়িতে উঠিয়া পড়িলাম। আমার সামনেই শিলা যতক্ষণ দেখা গেল ভূপেনের দিকে একদৃষ্টি চাহিয়া রহিল। হে পাঠক হে পাঠিকা, কৈফিয়ত আমি দিব না। শুধু কয়েকটা কথা বলি। শিলাকে নিয়া আমি যে আদিকাব্য রচনা করিতে চাই, ত্যাগের কাব্য তার চেয়ে CC