পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৫৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছোট বকুলপুরের যাত্রী আরেকজন বলে, “সার্চ করা যাক না ?” দীর্ঘ থলথলে লোকটি হুকুম দেয়, “এই! জিনিসপত্র নিয়ে নামে।” তার মুখের কথা খসতে না খসতে দুজনে দিবাকরকে ধরে টেনে নামিয়ে দেয়। উৎসাহ অথবা উত্তেজনার আতিশয্যে একজনের হাত থেকে পড়ে গিয়ে মুখবাধা মাটির হাড়িটা ভেঙে যায়, ছড়িয়ে পড়ে আধি হাড়ি জল আর তাতে কিলবিল করে গোটা ছয়েক শিং মাছ। দিবাকর গোসা করে বলে, “দিলে তো বাবুৱা, গরিবের পথ্যির দফা মেরে দিলে তো ? রুগী বৌটা এখন খাবে কি !” ‘বলি ওহে দিবাকর দাস’, একজন গম্ভীর মুখে বলে, “কারখানায় খেটে খাও বললে না ? কুলি মজুরের বেীরা কবে থেকে শিং মাছের ঝোল খাচ্ছে হে? পাচ ছ-টাকা শিং মাছের সেরা ।” “শিঙিমাছ খাওয়া মোদের র্যারণ আছে নাকি বাবু ?? এ ফোড়নের অপমানে ক্রুদ্ধ হয়ে গর্জন করে ওঠে, “শাটি আপ বেয়াদপ!” পোটলাটা খুলে তন্ন তন্ন করে খোজা হয়, তাতে একটা অঘটন ঘটে যায়। আন্নার বাচ্চাটা রাস্তায় দু-একবার পায়খানা করেছে, নোংরা ন্যাকড়া দল পাকিয়ে আন্না পুটলির মধ্যে রেখেছিল। ঘাটতে যাওয়ার অনুসন্ধানীর হাতে ময়লা লেগে যায়। গন্ধে ও স্পর্শে রাগ চড়ে যাওয়ায় বেহিসাবীর মতো পুটলিটাতে সে বল শুট করার মতো লাথি মেরে বসে। ফলে কাদার মতো তরল পদার্থ খানিকটা তার পায়েও লাগে, ছিটকে বন্দুকের গায়েও একটু আধটু লেগে যায়। গাড়িতে বিছানো বিচালি তুলে, ছেড়া বস্তাটার ভাজ খুলে খোঁজার পর গগন আর দিবাকরের গা খোজা হয় । দিবাকরের শার্টের পকেট থেকে বার হয় পানের cभाgक्bों । “বাঃ, সাজা পান । দে তো একটা ।” তিনটি পান অবশিষ্ট ছিল, তিনজনের মুখে যায়। পান চিবোতে চিবোতে একজন লণ্ঠনের আলোয় পান মোড়া ছাপান কাগজটার দিকে এক নজর তাকিয়েই যেন বৈদ্যুতিক শক্‌ খেয়ে চমকে ওঠে। কাগজটা ভাল করে মেলে ধরে সে বিস্ফারিত চোখে বড় হরফের হেডলাইনটার দিকে চেয়ে থাকে৷ -“বোট বকুলপুরের সংগ্ৰামী iš efTS5 loo নিগুঢ় আবিষ্কারের উত্তেজনায় কঁপা গলায় চেচিয়ে ওঠে, “পাওয়া গেছে।