পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৫৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাণিক গ্ৰন্থাবলী মাহুরে-রূপ-যৌবন অর্থসন্মান হাসি-উৎসবের কী সমারোহ উহাদের জীবনে। স্বান্ত্রি এগারটার সময়েও বিধুর জ্ঞান হইল না। কিছুক্ষণ হইতে হিমানী উসখুল করিতেছিল, হঠাৎ ব্যাকুল হইয়া সুকান্তকে বলিল, ডাক্তার বাবুকে আর একবার ” নিয়ে এসে } श्रकांक्ट नौब्रहद ठठेि ग्रा एgांझेल । হিমানী বলিল, দু’জন এনো, কনসাল্ট করবেন। সুকান্তর মুখে বিস্ময়ের চিহ্নও নাই, শুধু অভিজ্ঞতা। সামান্য একটু মাথা নাড়িয়া এমনভাবে স্বীকৃতি জানাইল যেন দু’জন ডাক্তার আনবার কথা সেও ভাবিতেছিল। প্ৰতিবাদের ইচ্ছা শঙ্করের মনে জাগিয়াছিল, কিন্তু কিসের প্রতিবাদ করিবে ? ইহাদের ভাব দেখিয়া একথা তো কল্পনাও করা যায় না যে, কলিকাতার সমস্ত ডাক্তার আনিয়া বিধুর চিকিৎসা করার চেয়ে বড় কৰ্ত্তব্য ইহাদের আর কিছু আছে । টর্চ জালিয়া সুকান্ত চলিয়া গেল। পাড়াটা স্তব্ধ হইয়া গিয়াছে-সেও যেন আজ অসুস্থ এবং ত্ৰয়োদশীর চাদের আলোর উপর তার শুশ্ৰদ্ধযার ভার। জানালার বাহিরেই চাদ ওঠার ইঙ্গিত, রোয়াকে বিধুর হাতে মাজ পিতলের ঘাঁটিটা চকচক করিতেছে। বিধুর পায়ের আঙ্গুলে রেড়ির তেলে ভেজা ন্যাকড়া জড়ানো, হঠাৎ শঙ্কর তাহা লক্ষ্য করিল। আজ দুর্ভাবনা-অতন্দ্ৰ নিশায় আলো নিবাইলে ওই পায়ে যদি জ্যোৎসা আসিয়া পড়ে ? হিমানীর পা’ দুটি চৌকীর তলের আবছা অন্ধকারে। জরিবসানো চটির দু’একটা জরি শুধু চিক-চিক করিতেছে। পা’ দুটি যেন অন্ধকারে মোড়া সোনা, কয়েকটি সূক্ষ্ম ছিদ্ৰ দিয়া পরিচয় মিলিতেছে। ওই পায়ের গোড়ালি কি ফাটা ? আঙ্গুলোর চিপায় কি জলে ক্ষয়-পাওয়া শাদা ঘা ? শঙ্করের মনে হইল হিমানীর পা’ দুটি চৌকীর তলা হইতে টানিয়া আনিয়া এই অসম্ভব সন্দেহ ভঞ্জন করিয়া না নিলে চিরদিন তার মন কেমন কৱিবে । চোখদুটা জ্বালা করিতেছে দেখিয়া শঙ্করের কৌতুক বোধ হইল। থাকিবার মধ্যে চোখে আছে একটু ক্ষীণ দৃষ্টি-সে চোখ। আবার জ্বালা করে। আপনি খাবেন না ? খেয়ে নিন। ভেবে আর কি করবেন। শঙ্কর চাহিয়া দেখিল হিমানী মুখের দিকে চাহিয়া আছে। স্ত্রীর অসুখের কথা ভাবিতেছে না বলিয়া তার একবিন্দু লজ্জা হইল না। বলিল, আজ খাব না। po 8