কৰিয়াছে? অথচ শীতল শখ করিয়া কাপড়খানা আনিয়া দিয়াছে, একবার না পরিলেই বা চলিবে কেন?
শ্যামা মাদুর লইয়া যায়, মাদুর পাতিয়া দুজনে বসেঃ চাদের আলোয় বসিয়া দুজনে দুটো একটা সাংসারিক কথা বলে, বেশি সময় থাকে চুপ করিয়া। বলার কি আর কথা আছে ছাই এ বয়সে! হ্যাঁ, শীতল শ্যামাকে একটু আদর করে, শীতলের স্পর্শ আর তেমন মোলায়েম নয়, কখনো যেন স্ত্রীলোকের সঙ্গ পায় নাই, এমনি আনাড়ির মত আদর করে। শ্যামা দোষ দিবে কাকে? সেও তো কম মোটা হয় নাই!
তারপর একদিন শ্যামা সলজ্জ ভাবে বলে, কি কাণ্ড হয়েছে জান?
শীতল শুনিয়া বলে, বটে নাকি!
শ্যামা বলে, হ্যাঁ গো, চোখ নেই তোমাৱ?— কি হবে বলত এবার, ছেলে না মেয়ে?
— মেয়ে।
— উঁহু ছেলে।— বুকু বেঁচে থাক, আমার আর মেয়েতে কাজ নেই বাবু।
বলিয়া শ্যামা হাসে। মধুর পরিপূর্ণ হাসি, দেখিয়া কে বলিবে, শীতলের মত অপদার্থ মানুষ তাহার মুখে এ হাসি যোগাইয়াছে।
মাঝখানে একটা শীত চলিয়া গেল, পরের শীতের গোড়ার দিকে, শ্যামার নূতন ছেলেটির বয়স যখন প্রায় আট মাস, হঠাৎ একদিন সকালবেলা মামা আসিয়া হাজির।
শ্যামার সেই পলাতক মামা তারাশঙ্কর।
ছোট খাট বেঁটে লোকটা, হাত পা মোটা, প্রকাণ্ড চওড়া বুক। একদিন ভয়ঙ্কর বলবান ছিল, এখন মাংসপেশীগুলি শিথিল হইয়া আসিয়াছে। শেষবার শ্যামা যখন তাহাকে দেখিয়াছিল মাথার চুলে তাহার পাক ধরে নাই, এবার দেখা গেল প্রায় সব