পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অহিংসা চেষ্টাও করে। মহেশ চৌধুরীর এখনকার উপদেশ, সেদিনকার ব্যাপারটা মন হইতে মুছিয়া ফেলিতে হইবে। কথায়, ব্যবহারে, এমন ভাব দেখাইতে হইবে, যেন কিছুই ঘটে নাই। ভাবিয়া চিন্তিয়া সদানন্দ সেই চেষ্টাই করে। কয়েকদিন গভীর ও বিষন্নভাবে ঘরের কোণায় কাটাইবার পর হঠাৎ সেদিন হাসিমুখে গিয়া হাজির হয়। সান্ধ্য মজলিসে। সকলেই উপস্থিত আছে। বিভূতি এবং মাধবীলতাও । প্রথমটা সদানন্দের ভয় হয়, বিভূতি হয়তো রাগ করিয়া উঠিয়া যাইবে, হয়তো একটা কেলেঙ্কারী করিয়া বসিবে। মাধবীলতা হয় তো তেমন কিছু করিবে না, সে সাহস তার নাই, কিন্তু কথায় ব্যবহারে সহজ ভাব কি ফুটাইম্বা তুলিতে পরিবে মেয়েটা ? মহেশ চৌধুরী তো বলিয়া খালাস সব চুকিয়া বুকিয়া গিয়াছে, কিন্তু ওদের দুজনের পক্ষে কি চুকিয়া বুকিয়া যাওয়া সম্ভব ? কিছুক্ষণ কাটিয়া যাওয়ার পর সদানন্দ বুঝিতে পারে, ব্যাপারটা সত্যসত্যই সকলে মন হইতে মুছিয়া ফেলিয়াছে—যতটা মুছিয়া ফেলা সম্ভব। বিভূতি আর মাধবীলতা যে একটু সঙ্কোচ আর অস্বস্তি বোধ করিতেছে, প্ৰথমদিকে এটা পরিষ্কার বুঝা গিয়াছিল, কিছুক্ষণ পরে দুজনেই অন্যদিনের মত সহজভাবে সকলের হাসি গল্পে যোগ দিয়াছে। সদানন্দের খুন্সী হওয়া উচিত ছিল ; কিন্তু মনটা তার হঠাৎ বড় খারাপ হইয়া গেল। আর একবার সে যেন মহেশ চৌধুরীর কাছে হারিয়া গিয়াছে। অতি শোচনীয় কুৎসিত পরাজয় । সেদিনকার ব্যাপারে মহেশ চৌধুরীর কাছে সে যে ছোট হইয়া গিয়াছে, আজ এই সন্ধ্য-মজলিসে আসিয়া প্ৰথম সেটা সদানন্দের খেয়াল হইল। তার মনে হইতে লাগিল, এই উদ্দেশ্যই ছিল মহেশ চৌধুরীর, তাকে হীন করার জন্যই সে হাতুড়ি দিয়া সেদিন নিজের মুখে আঘাত করিয়াছিল। এখনো মহেশ চৌধুরীর মুখ অল্প অল্প ফুলিয়া আছে-কি সাংঘাতিক মানুষ মহেশ চৌধুরী। CN যাই হোক, একদিন যথারীতি বিভূতি আর মাধবীলতার বিবাহটা হইয়া গেল। প্ৰকাশ্য জীৰনটা যেমন কাটিতেছিল, প্ৰায় সেই রকমই কাটিতে লাগিল দুজনের, বেশভূষার কিছু পরিবর্তন দেখা গেল মাপৰীলতার এৰং চেহারাটাও যেন USA তার বদলাইয়া যাইতে লাগিল। এমন পরিবাৰ্ত্তন যে দেখিলে মনে প্রশ্ন জাগে, এতদিন কি অসুখী ছিল মেয়েটা, এবার সুখী হইতে আরম্ভ করিয়াছে ? বিবাহে বিপিন আসিয়াছিল, পরে আরেক দিন আসিয়া সে অনেকক্ষণ সকলের সঙ্গে আলাপ করিয়া গেলা-সদানন্দ ছাড়া। আমল দিলে সদানন্দের সঙ্গেও হয়তো সে ভাবি জমাইয়া যাইতশক্ৰতা ভুলিয়া যাওয়ার প্রয়োজনে মানুষ মানুষের সঙ্গে যে রকম ভাব জমায়। মহেশ চৌধুরী সদানন্দকে কেন্দ্ৰ করিয়া নতুন একটি আশ্রম খুলিতেছে, এ খবরটা বিপিন পাইয়াছিল, কিন্তু রাগ দুঃখ বা হিংসার বদলে তার উৎসাহই দেখা গেল বেশী। নিজেই কথা তুলিয়া সে মহেশ চৌধুরীকে বলিয়া গেল যে, রেশারেশি আশঙ্কা করিবার কোন কারণই অনুমান করা যায় না, বিপিন আর মহেশের আশ্রমের উদ্দেশ্য হইবে সম্পূর্ণ १५क। “আপনার আশ্রমের উদেশ্যটা কি বিপিনবাবু ?” প্রশ্নটা অসঙ্গত । এতকাল যে আশ্রম চলিতেছে, চারিদিকে যে আশ্রমের বেশ নামও একটু আছে, তার মালিককে বাড়ীতে পাইয়া একেবারে আশ্রমের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে এ রকম একটা প্রশ্ন না করিলেই ভাল হইত। মহেশ চৌধুরীকে বিপিন কোনদিন পছন্দ করিত না, আশ্রমে লোকটাকে সে চিরদিন দমাইয়া রাখিবার চেষ্টাই द्विश्वाँ८छ्, ७ेन शॉ९ e:ङौ८ठद्र क९ निश्च सांएंौ বহিয়া আসিয়া এ রকম খাতির জমানোর চেষ্টাতেই মহেশের কৃতাৰ্থ হইয়া যাওয়া উচিত ছিল। আশ্রমের উদ্দেশ্য ? কে না জানে বিপিনের আশ্রমের উদ্দেশ্যের কথা। জিজ্ঞাসা করাটাই दछछ) । বিপিনের কোন জবাব না পাইয়া মহেশ চৌধুরী আবার বলিয়াছিল, ‘সত্যি কথাটা বলি, এতকাল আপনার আশ্রমে যাতায়াত করছি কিন্তু উদ্দেশ্যটা छैिक ठूदgठ °ग्नेि नि । 7थलू यउकाव्य छिप्णन, ততকাল তবু একটা কারণ ছিল, ওঁর জন্যে-” বিপিন মৃদু হাসিয়া বলিয়াছিল, “প্ৰভুই বটেন। মহেশ চৌধুরী দুই কাণে আঙ্গুল দিয়া বলিয়াছিল, ‘ছি’ বিপিনীবাবু, 食 |՚ তবু তো সৰ্ব্বজনবিদিত আশ্রমের উদেখাটা বিপিন পৰ্য্যন্ত মহেশকে ঠিক ভাবে বুঝাইয়া দিতে পারিল না। নিজের মনেও তার ধারণা ছিল কথাটা অত্যন্ত সহজ ও সরল । বলার সময় দেশ,