পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক-গ্ৰন্থাবলী س छूहैि দু’বছরের মধ্যে শ্যামার কোলে আবার ছেলে আসিল। সেই বাড়িতে, সেই ছোট ঘরে শরৎকালের তেমনি এক গভীর নিশীথে। কিন্তু মানুষের জীবনের অভাবের পূরণ আছে ক্ষতির পূরণ নাই বলিয়া প্ৰথম সন্তানকে শ্যামা ভুলতে পারে নাই। ছেলে মরিয়া যাওয়ার পর কয়েকমাস সে মুহ্যমান হইয়াছিল, এই অবস্থাটি অতিক্রম করিতে তাহার মধ্যে যে পরিবর্তন আসিয়াছিল এখনো তাহা স্থায়ী হইয়া আছে। সন্তানের আবির্ভাবে এবার আর তাহার সেই অসংযত উল্লাস আসে নাই, উদ্দাম কল্পনা জাগে নাই। সে শান্ত হইয়া গিয়াছে। সংসারধম করিলে ছেলেমেয়ে হয়, ছেলেমেয়ে হইলে মানুষ সুখী হয়, এবারের ছেলে হওয়াটা তাহার কাছে শুধু এই। এতে না আছে বিস্ময়, না আছে উন্মত্ততা;- চোখের পলকে একটা বিরাট ভবিষ্যতকে গড়িয়া তুলিয়া বহিয়া বেড়ানো, ক্ষণে ক্ষণে নব নব কল্পনার তুলি দিয়া এই ভবিষ্যতের গায়ে রঙ মাখানো, আর সর্বদা ভয়ে ও আনন্দে মশগুল হইয়া থাকা, এসবই কিছুই নাই। এবারও আঁতুড়ে এগারোটি দিবারাত্রি অনির্বাণ দীপ জলিয়াছিল, কিন্তু শ্যামার LBEB BBBD DBD DD BDS BD D DBBDD DBDDBBDS এবার পূর্বপুরুষেরা গভীর রাত্রে শ্যামার ছেলেকে ভিড় করিয়া দেখিতে আসেন নাই। ছেলের ক্ষীণ বক্ষস্পন্দন হঠাৎ একসময় থামিয়া যাইতে পারে শ্যামার এ আশঙ্কা ছিল, কিন্তু আশঙ্কায় ব্যাকুল হইয়া সে জাগিয়া রাত কাটায় নাই। ও বিষয়ে তাহার কেমন একটা উদাসীনতা আসিয়াছে। ভাবিয়া লাভ নাই,উতলা হইয়া লাভ নাই, ধরিয়া রাখিবার চেষ্টা করিয়া কোন ফল হইবে না। যিনি দেন। তিনিই নেন। তার দেওয়াকে যখন ঠেকানো যায় না, নেওয়াকে ঠেকাইবে কে সে শীতলকে স্পষ্ট বলিয়াছে ; এবার আর যত্নটত্ব করব না। বাবু। অযত্ন করা কি ভাল হবে ? অযত্ন করব না তো । নাওয়াবো, খাওয়াবো, যেমন দরকার সব করব । তার বেশি কিছু নয়। কি হবে করে ? শীতল কিছু বলে নাই। কি বলিবে ? শ্যামা আবার বলিয়াছে, সেবার আমার দোষেই তো গেল। শীতল একটু ভাবিয়া বলিয়াছে, এণার কিন্তু পায় আছে শ্যামা। হতে না হতে কমল প্রেসের চাকরিটা পেলাম। বোলো না বাবু ওসব। পয় না ছাই। আগে বাচুক । কিন্তু কথাটা তুচ্ছ করিবার মত নয়। পয়মন্ত ছেলে ? হয় তো তাই । সব অকল্যাণ ও নিরানন্দের অন্ত করিতে আসিয়াছে হয় তো। শ্যামা হয় তো আর দুঃখ পাইবে না। এরা সময় মত মাইনে দেবে ? দেবে না ? কমল প্রেস কত বড় প্রেস জানো! এবার ছেলে তাহার বঁচিবে শুষ্ঠামা যে এ আশা করে না। TD DDD S BDB BDS TDD BDD BD DB BBB DDD খাইলে চিরদিনের জন্য ভাঙ্গিয়া পড়িবে। তবু আশাতেই আশঙ্কা বাড়ে। সব শিশুই যদি মরিয়া যাইত পৃথিবীতে এতদিনে তবে আর মানুষ থাকিত না, শ্যামার এই পুৱানো যুক্তিটাও এবার হইয়া গিয়াছে বাতিল। সংসারে এমন কত নারী আছে *(' 'sRise C5 c: || GTG (R SUMS AS SR) (<F T5S বলিতে পারে ? একে একে পৃথিবীতে আসিয়া তাহার ছেলেমেয়ের কেউ বারোদিন কেউ ছ'মাস বঁাচিয়া যদি মরিয়া যাইতে থাকে ? বলা তো যায় না। এমনি যাদের অদৃষ্ট তাদের এক একটি সন্তান দশ-বারো বছর টিকিয়া থাকিয়া হঠাৎ একদিন মরিয়া যায়। এরকমও অনেক দেখা গিয়াছে। হালদার বাড়ির বড়বেী দু'বার মৃতসন্তান প্রসব করিয়াছিল, তার পরের সন্তান দুটি বঁচিয়া ছিল বছরখানেক। শেষে যে মেয়েটা আসিয়াছিল , তাহার বিবাহের বয়স হইয়াছিল। কি আদরেই মেয়েটা বড় হইয়াছিল! তবু তো द5िल न । নৈসৰ্গিক প্ৰতিবিধানের ব্যবস্থা এবার কম করা হয় নাই। শ্যাম গোটা পাচেক মাদুলি ধারণ করিয়াছে, কালীঘাট ও তারকেশ্বরে মানত করিয়াছে পুজা । মাদুলিগুলির মধ্যে তিনটি বড় দুলভ মাদুলি । সংগ্ৰহ করিতে শ্যামাকে কম বেগ পাইতে হয় নাই। মাদুলি তিনটির একটি প্রসাদী ফুল, একটিতে সন্ন্যাসীপ্রদত্ত ভস্ম ও অপরটিতে স্বপ্নাদ্য শিকড় আছে। শ্যামার নির্ভর এই তিনটি মাদুলিতেই বেশি। নিজে সে প্ৰত্যেক দিন মাদুলি ধোয়া জল খায়, একটি একটি করিয়া মাদুলিগুলি ছেলের কপালে ছোয়ায়। তারপর খানিকক্ষণ সে সত্যসত্যই নিশ্চিন্ত হইয়া থাকে। এবারও মন্দাকিনী আসিয়াছে। সঙ্গে আনিয়াছে তিনটি ছেলেকেই ৷ শুমার সেবা করিতে আসিয়া নিজের ছেলের সেবা করিয়াই তাহার দিন-কাটে । এমন আব্দারে ছেলে শ্যামা আর দ্যাখে নাই। ঠাকুরমার জন্য কঁাদিত কঁাদিতে যমজ ছেলে দুটি বাড়ি ঢুকিয়াছিল, তারপর কতদিন কাটিয়া গিয়াছে, এখনো তাহারা এখানে নিজেদের খাপ খাওয়াইয়া লইতে পারে নাই। বায়না ধরিয়া সঙ্গে সঙ্গে না মিটিলে ঠাকুরমার জন্যই তাহদের শোক উথলিয়া ওঠে। দিবারাত্রি বায়নারও তাহদের শেষ নাই। অপরিচিত আবেষ্টনীতে কিছুই বোধ হয় তাহদের ভাল লাগে না, সুর্বদা খুতখুতে করে। কারণ্যে-অকারণে রাগিয়া কঁাদিয়া সকলকে মারিয়া অনর্থ বাধাইয়া দেয়। মন্দা প্ৰাণপণে তাহাদের তোয়াজ করিয়া চলে। সে যেন দাসী, রাজার ছেলে দুটি দুদিনের জন্য তাহার অতিথি হইয়া সৌভাগ্য ও সম্মানে তাঁহাকে পাগল করিয়া দিয়াগে, ওদের তুষ্টির জন্য প্ৰাণ না দিয়া সে ক্ষান্ত হইবে না। শ্যামা প্ৰথমে বুঝিতে