পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিষ্ণুপ্রিয়া বলিল, বোসে। শ্যামা মেঝেতেই বসিয়া বলিল, কবে ফিরলেন দিদি ? দিব্যি সেরেছে। শরীর, রাজরাণীর মত রূপ করে এসেছেন, রঙ যেন আপনার দিদি ফেটে পড়ছে। --অসুখ শরীর নিয়ে হাওয়া বদলাতে গেলেন, আমরা এদিকে ভেবে মরি কবে দিদি আসবেন, খবর পেয়ে ছুটে এসেছি। বিষ্ণুপ্রিয়া হাই তুলিল, উদাস ব্যথিত হাসির সঙ্গে বলিল, এসেই আবার গরমে শরীরটা কেমন কেমন করছে, উঠতে বসতে বল পাইনে, বেশ ছিলাম। সেখানে,-থুকি তো কিছুতে আসবে না, কিন্তু ইস্কুল টিস্কুল সব খুলে গেল, কত আর কামাই করবে ? তাই সকলকে নিয়ে চলেই এলাম। দাঞ্জিলিংএ শুনেছি। খুব শীত ?-শ্যামা বলিল । শীত নয় ? শীতের সময় বরফ পড়ে -বিষ্ণুপ্রিয়া বলিল । DB LEDBK DSBBLS BDS DD B BDDEK শু্যামার খবর বিষ্ণুপ্রিয়া কিছু জিজ্ঞাসা করে না। শ্যামার ছেলেমেয়েরা সকলে কুশলে আহে কি না, শ্যামার দিন কেমন করিয়া চলে জানিবার জন্য বিষ্ণুপ্রিয়ার এতটুকু কৌতুহল দেখা যায় না। শ্যামার বড় আপশোষ হয়। কে না জানে বিষ্ণুপ্রিয়া যে একদিন তাহাকে খাতির করিত সেটা 'ছল শুধু খেয়াল, শ্যামার নিজের কোন গুণের জন্য নয়। বড়লোকের অমন কত খেয়াল থাকে। শ্যামাকে একটু সাহায্য করিতে পারিলে বিষ্ণুপ্রিয়া যেন কৃতাৰ্থ হইয়া যাইত। না মিটাইতে পারিলে বড়লোকের খেয়াল নাকি প্ৰবল হইয়া ওঠে শ্যামা শুনিয়াছে, আজি দুঃখের দিনে শ্যামার জন্য কিছু করিবার সখ বিষ্ণুপ্রিয়ার কোথায্য গেল ? তারপর হঠাৎ এক সময় শ্যামার একটা অদ্ভুত কথা মনে হয়, মনে হয় বিষ্ণুপ্রিয়া যেন প্ৰতীক্ষা করিয়া আছে। কিছু কিছু সাহায্য বিষ্ণুপ্রিয় তাহাকে করিবে, কিন্তু আজ নয়,--শ্যাম যেদিন ভাঙ্গিয়া পড়বে, কাদিয়া হাতে পায়ে ধরিয়া ভিক্ষা চাহিবে, এমন সব তোষামোদের কথা বলিবে, ভিখারির মুখে শুনিতেও মানুষ যাহাতে লজ্জা বোধ করে,-সেইদিন। বাড়ি ফিরিয়া শু্যামা বড় অপমান বোধ করিতে লাগিল, মনে মনে বিষ্ণুপ্রিয়াকে দুটি একটি শাপান্তও করিল। তত্ত্ব, একদিক দিয়া সে যেন খুসিই হয়, একটু যেন আরাম বোধ করে। অন্ধকার ভবিষ্যতে এ যেন ক্ষীণ একটি আলোক, বিষ্ণুপ্রিয়ার এই অপমানকর নিষ্ঠার প্রত্যাশা। একান্ত নিরুপায় হইয়া পড়িলে বিষ্ণুপ্রিয়ার হাতে পায়ে ধরিয়া কদাকাটা করিয়া সাহায্য আদায় করা চলিবে এ চিন্তা আঘাত করিয়াও শ্যামাকে যেন সত্ত্বনা দেয় । দিনগুলি এমনিভাবে কাটিতে লাগল। আকাশে ঘনাইয়া আসিল বর্ষার মেঘ, মানুষের মনে আসিল সজল বিষন্নতা । ক'দিন ভিজিতে ভিজিতে স্কুল হইতে বাড়ি ফিরিয়া বিধান জরে পড়িল, হারান ডাক্তার দেখিতে আসিয়া বলিল মানিক-গ্ৰন্থাবলী ইনফ্লুয়েঞ্জা হইয়াছে। রোজ একবার করিয়া বিধানকে সে দেখিয়া গেল। আজ পর্যন্ত শুষ্ঠামার ছেলেমেয়ের অসুখে বিসুখে অনেকবার হারান ডাক্তার এ বাড়ি আসিয়াছে, শ্যামা কখনো টাকা দিয়াছে কখনো দেয় নাই । এবার ছেলে ভাল হইয়া উঠিলে একদিন সে হারান ডাক্তারের কাছে কাদিয়া ফেলিল, বলিল, বাবা, এবার তো কিছুই দিতে পারলাম না। আপনাকে ? হারান বলিল, তোমার মেয়েকে দিয়ে দাও, আমাদের বকুলরাণীকে ? কান্নার মধ্যে হাসিয়া শ্যামা বলিল, তা নিন, এখুনি নিয়ে যান। শ্যামার জীবনে এই আরেকটি রহস্যময় মানুষ । শীর্ণকায় তিরিক্ষে মেজাজের লোকটির মুখের চামড়া যেন পিছন হইতে কিসে টান করিয়া রাখিয়াছে, মনে হয় মুখে যেন চকচকে পালিশ করা গাম্ভীৰ্য্য । সর্বদা কি যেন সে ভাবে, বাস যেন সে করে একটা গোপন সুরক্ষিত জগতে-সংসারে মানুষের মধ্যে চলাফেরা কথাবাৰ্ত্তা যেন তাহার কলের মত, আন্তরিকতা নাই। অথচ কৃত্রিমও নয়। শু্যামার কাছে সে যে টাকা নেয় না, এর মধ্যে দয়ামায়ার প্রশ্ন নাই, মহত্ত্বের কথা নাই, টাকা শ্যামা দেয় না বলিয়াই সে যেন নেয় না, অন্য কোন কারণে নয়। শ্যামা দুরবস্থায় °iएिछझicछ ७धक९। क२५Cन| cग कि ७ाcद ? মনে হয় বকুলকে বুঝি হারান ডাক্তার ভালবাসে। শ্যামা জানে তা সত্য নয়। এ বাড়িতে আসিয়া হারানের বুঝ অন্য এক বাড়ির কথা মনে পড়ে, শ্যামা আর বকুল বুঝি তাহাকে কাদের কথা মনে পড়াইয়া দেয়। বকুলকে কাছে টানিয়া হারান যখন তাহার মুখের দিকে তাকায় শ্যামাও যেন তখন আর একজনকে দেখিতে পায়, 5Ç3 Jf3 351 f'31 8CÀ I LA KVICKS CKfi? ÇfİRCVS আসিবার জন্য হারান। তাই লোলুপ, একবার ডাকলে দশবার আসে, না ডাকলেও আসে । মানুষকে অপমান না করিয়া যে কথা বলতে পারে না, রোগের অবস্থা সম্বন্ধে আত্মীয়ের ব্যাকুল প্রশ্নে পৰ্যন্ত যে সময় সময় আগুনের মত জলিয় ওঠে, বহুদিন আগে শ্যামার কাছে সে পোষ মানিয়াছিল। শ্যামা তখন হইতে সব জানে। একটা হারানো জীবনের, পুনরাবৃত্তি এইখানে হারানের BBODS S S SDDBKS ODEDS S gDBS gBED S BDDBBD পুনরাবৃত্তি, তা হোক, তাও হারানের কাছে দামি। শ্যামা ছিল হারানের মেয়ে সুখময়ীর ছায়া, সুখময়ীর কথা শ্যামা শুনিয়াছে। এই ছায়াকে ধরিয়া হারান শ্যামার সমান বয়সের সময় হইতে সুখময়ীর জীবনস্মৃতির বাস্তব অভিনয় আ[|<ষ্কার কারিয়াছে’- বকুলের মত একটি মেয়েও নাকি সুখময়ার ছিল । শ্যামার ছেলেরা তাই হারানের কাছে মূল্যহীন, ওদের দিকে সে চাহিয়াও