পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झू लू ल 6°ों (g r) তখনো আকাশ থেকে আলোর শেষ আভাসটুকু মুছে যায় নি। দু'তিনটি তারা দেখা দিয়েছে, আরও কয়েকটি দেখা দিতে দিতে আবার হারিয়ে যাচ্ছে। আর এক মিনিট দু’মিনিটের মধ্যে রাত্রি সুরু হয়ে যাবে। জীবিতের সঙ্গে মৃতের সংযোগ স্থাপনের সবচেয়ে প্রশস্ত সময় সন্ধ্যা । ভর সন্ধ্যাবেল শুভ্ৰ দামিনীকে আশ্রয় করেছিল। আজ সন্ধ্যা পার হলে রাত্রি আরম্ভ হয়ে গেলে চেষ্টা করেও শুল্লা হয়তো তার সঙ্গে কথা বলতে পারবে না । আর দেরী না করে এখুনি শুভ্রাকে সুযোগ দেওয়া উচিত । চোরের মত ভিটে থেকে নেমে বাশ ডিঙ্গিয়ে ধীরেন পা টিপে টিপে ডোবার মাঠের দিকে এগিয়ে গেল। অদ্ভুত বিকৃত গলার ডাক শুনে শান্তি লণ্ঠন হাতে ঘর থেকে বেরিয়ে এল । বাঁশের ওপারে দাড়িয়ে হিংস্ৰ জন্তুর চাপা গৰ্জনের মত গম্ভীর আওয়াজে ধীরেন তার নিজের নাম ধরে ডাকাডাকি করছে। গেঞ্জি আর কাপড়ে কাদা ও রক্ত মাখা । ঠোঁট থেকে চিকি বেয়ে ফোটা ফোেট। রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। “Si Jf3 C3 ING ’ 'ডিঙ্গিয়ে এসো ! বঁাশ ডিঙ্গিয়ে চলে এসো ! কি হয়েছে ? পড়ে গেছ নাকি ?” 'ডিঙ্গোতে পারছি না । বাশ সরিয়ে দাও।” বাশ ডিঙ্গোতে পারছে না ! মাটিতে শোয়ানো বঁাশ ! শান্তির আর এতটুকু সন্দেহ রইল না। আকাশ চেরা তীক্ষ্ম গলায় আৰ্ত্তনাদের পর আৰ্ত্তিনাদ সুরু করে দিল । তারপর প্রতিবেশী এল, পাড়ার লোক এল, গায়ের লোক এল। কুঞ্জও এল। তিন চার কলস জল ঢেলে ধীরেনকে স্নান করিয়ে দাওয়ার খুঁটির সঙ্গে তাকে বেঁধে ফেল' হল। মন্ত্র পড়ে, জল ছিটিয়ে, মালসার আগুনে পাতা ও শিকড় পুড়িয়ে ঘণ্টা খানেকের চেষ্টায় ধীরেনকে কুঞ্জ নিঝম করে ফেলল । তারপর মালসার আগুনে কঁচা হলুদ পুড়িয়ে ধীরেনের নাকের কাছে ধরে বস্ত্ৰকণ্ঠে জিজ্ঞাসা করল, “কে তুই ? বল তুই কে ?” ধীরেন বলল, “আমি বলাই চক্ৰবৰ্ত্তী ! শুভ্ৰাকে আমি খুন করেছি।”