পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

oਤ ਟੋ ਚ ਫਸ আঠার মিনিট লেট । সারারাত উৰ্দ্ধশ্বাসে ছুটে কলকাতা পৌছুতে আঠার মিনিট লেট করে গাড়ীটা কি আমাৰ্জনীয় অপরাধই তার কাছে করেছে। দিবাকর বাবুর বোন সুবালা জিজ্ঞেস করল, “গাড়ীতে ভিড় ছিল না ?” 'उीम डिए । পেয়েছিলাম।” সুবালা ভাবলা, ছেলেটা কি মিথ্যাবাদী ! সারারাত গাড়ীতে জেগে বসে এলে কারো এমন তাজা চেহারা থাকতে পারে! “সারা রাত ঘুমোও নি লবি’ ?” ‘ঘুমিয়েছি। আমাৰ এই বাক্সে পা ঝালিয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে বেঞ্চে মাথা রেখে ঘুমিযে পড়লাম। জেগে দেখি একেবারে নৈহাটি পৌছে গেছি।” ষ্টীলেৰ ফোঁড়ায় কণ্টকিত তার ট্রাঙ্কটির দিকে তাকিয়ে কেবল সুবালা নয় উপস্থিত সকলেই শিউরে উঠল। ট্রাঙ্কের ওপর বিছানা পেতে নিয়েছিল নিশ্চয় ? কিন্তু বিছানা কই রমেনের ? সঙ্গে তো শুধু একটা সতরঞ্চি ! ‘আমি তো তোষক বালিশে শুই না। চৌকিতে সত^ঞ্চি বিছিয়ে চাদর পেতে নিই। শক্ত বিছানায় শোয়া খুব উপকারী পিসীমা ।” পিসীমা ? কাকে সে পিসীমা বল%ে ? ‘আমি তোমার পিসীমা নাই।” সুবালা প্ৰতিবাদ छन्दः । ‘পিসীমাই হন আপনি ।” কোনমতে একটু বসবার যায়গা রমেন মৃদু মৃদু হাসছে ! ‘আমি তোমার এই পিসে মশায়ের বোন-ছোট বোন , সুবালা দিবাকর বাবুকে দেখিয়ে দিল। “তোমার পিসীমা রান্নাঘরে আছেন।” মনে মনে সুবালা ভীষণ চটে গেল। কোথাকার হনুমান । ছেলে । দিবাকর বাবর বরিস যাট হতে চলল, রমেনের পিসীমার BB SYYS SBBBDDSDBD DBDBED S DD LDO DDB BBBD পিসীমা, বয়স তার এখনো সাতাশ হয় নি ! চোখে না দেখে থাকলেও এটুকু তো তার জানা আছে যে তার পিসীমার বড় ছেলেটার একটা মেয়ে হয়েছে সম্প্রতি, তার পিসীমা'র এখন ঠাকুরমা পদবী ! রমেন বলল, “এই পিসীমার সম্পর্কে আপনাকে পিসীমা বলিনি। নন্দ পিসেমশায়ের সম্পর্কে আপনি পিসীমা হন।' শুনে কেবল সুবালা নয়, উপস্থিত সকলেই থ বনে গেল। সকলের মনে পড়ল, সত্য সত্যই রমেনের সঙ্গে মুবালার খু'দিক থেকে সম্পর্ক আছে, সে তার এক পিসেমশায়ের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী। দিবাকর অনেক অনেক দূর সম্পর্কের পিসেমশায়, কিন্তু প্ৰথমে রমেনের বাবার মাসতুতো বোনকে বিযে করেছিলেন বলে সুবালার স্বামী নন্দগোপাল তার খাটি মাসতুতো পিসেমশায়। ছেলেটা ভুল করেনি, সুবালাকে জন্মে কখনো চোখে না দেখে থাকলেও সে যে কে মনে মনে আন্দাজ করে তার সঙ্গে ডবল সম্পর্কের মধ্যে কোনটা বেশী লাগসই। তাও স্থির করে ফেলেছে। এতো যেমন তেমন ছেলে নয় ! ইতিমধ্যে দিবাকর বাবুর স্ত্রী এসে পড়েছিলেন। মানুষটা তিনি রোগ এবং লম্বা, মুখখানা বদমেজাজী। চশমার ভেতর দিয়ে রমেনকে নিরীক্ষণ করে তিনি যথাবিহিত স্নেহদ্র বিস্ময়ের ভদ্রতা করে বললেন, ‘ওম, তুমি চারুদাদার ছেলে ?” রমেন বলল, “বাবাকে আপনি দাদা বলেন পিসীমা ? আমি শুনেছিলাম। বাবা আপনার চেয়ে ছোট ।” পিসীমা। ঢাকা করে টোক গিলে ফেললেন । বিড়বিড় করে। বললেন, ‘হ্যা, দাদা বলি।” তারপর প্রায় ধমক দিয়ে বলে উঠলেন, 'নাও, জাম-কাপড় ছেড়ে মুখ হাতি-ধুখে নাও।' রমেনের (প্ৰণাম গ্রহণের জন্য গুরুজনেরা (প্ৰস্তুত হয়ে এতক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন, ভাবছিলেন প্ৰণাম করার কথাটা ববি তার মনে নেই। রমেন জামার বোতাম খুলতে আরম্ভ কাবায় সুবালা আর চুপ করে থাকতে পাবল না। ‘পিসীমা পিসেমশাইকে প্ৰণাম কর রমেন ।” “আমি তো কাউকে প্ৰণাম করি না, ছোট পিসীমা ?” 'প্ৰণাম কর না ।” * প্ৰণাম করা ছেডে ছিয়েছি। ! এমন ভাবে রমেন কথাটা বলল, যেন একটা তার বদ অভ্যাস ছিল, খুল মনের জোর দেখিযে অভ্যাসটা ত্যাগ করেছে। সুবালা আর পিসীমা বাক্যাহারা হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলেন । পিসীমার সেজ মেয়ে রাণী খিল খিল করে হেসে উঠেই বিবৰ্ণ হয়ে চুপ করে গেল। দিবাকরবাবু ঘরে আছেন ভুলে গিয়ে সে হেসে ফেলেছিল। বাড়ীতে বিশেষ করে তার সামনে, কারো শব্দ করে হাসাটা দিবাকরবাবু পছন্দ করেন না । অন্য সময় হয়তো তিনি হাসি বন্ধ করা সত্ত্বেও রাণীকে ধমক দিতেন, এখন নবাগত ছেলেটার চমকপ্ৰদ পাকামিতে স্তম্ভিত হয়ে যাওয়ায় মেয়েকে শাসন করতে বোধ হয় ভুলে গেলেন। যতবড় বেয়াদপি হোক, বাড়ীতে যে পা দিয়েছে মোটে পাঁচ মিনিট, তার ওপর গজ্জন করে ওঠা উচিত নষ ভেবে আত্মসম্বরণের অতি কষ্টকর চেষ্টায় কাতর হয়েই সম্ভবতঃ তিনি হঠাৎ ধাপ করে চৌকিতে বসে পড়লেন। চৌকীটা কাঁচ মচ শব্দ করে প্রতিবাদ জানােল। দিবাকর বাবুর দেহটি প্ৰকাণ্ড, চুলে পাক ধরলেও গায়ে তার এখনো অসম্ভব