পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিহ্ন Y 8S সুতরাং তখন মনটা শক্ত করতে হল। আমিনার। চোখের জল চলে গেল আড়ালে, অন্য সময়ের জন্য। ছেলে যদি মুশকিলে পড়েই থাকে, তাকে এখন সাহস যোগানো দরকার, নিজের দুর্বলতা দিয়ে তাকে কাবু করে আনা সঙ্গত হবে না। রম্বলিও জানত, তার বিপদের খবর শুনে মারি পক্ষে আত্মসংবরণ করা সহজ হবে। হাতে গুলি লেগেই সব শেষ হয়নি, এখনো হাঙ্গামা সঞ্চিত আছে তার জন্য, একথা শুনলেই মার কান্ন স্থগিত হয়ে যাবে। “আমাকে গ্রেপ্তার করেছে।” ‘গ্রেপ্তার ? কেন ? “হাঙ্গামায় ছিলাম বলে ।” “তোর তাতে গুলি লাগল, তোকেই গ্ৰেপ্তার করল কি রকম ? “ওই তো খাটি প্রমাণ যে আমি হাঙ্গামায় ছিলাম। নইলে আহত হব কেন ? “বাঃ, বেশ ।” খানিক্ষণ চুপ করে থাকে রাসুল। শরীরটা সত্যই বড় দুর্বল লাগছে। মনে কোন কষ্ট নেই। কিন্তু শান্ত গম্ভীর সেই করুণ বিষাদের ভাবটা কাটছে না । আনমনা ছেলের চুলের ভেতরে আঙুল দিয়ে আমিনা তার মাথাটা তোকিয়ে দেন। ধীরে ধীরে । মনে অসংখ্য প্রশ্ন এসে ভিড় করেছে। তার মধ্যে কয়েকটি মাত্র জিজ্ঞাসা করা যায়, বাকীগুলি চিরকাল অবোধ আকুল মনের প্রশ্ন হয়েই থাকবে। ‘গ্ৰেপ্তার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছিল ?” “না, হাসপাতালে গ্রেপ্তার করেছে।” ‘জামিন ब्ि “না, জামিন দেয়নি।” “তবে Y ‘পালিয়ে এসেছি, তোমার জন্যে। ভোরে আবার ফিরে যেতে হবে।” ‘কেন ? ফিরে যাবি কেন ? “যাব না ? আরও তো কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছে, তারা কেউ পালায়নি। ফিরে না গেলে লোকে বলবে না তোমার ছেলে গ্রেপ্তার হয়ে এক পালিয়েছে ? “তবে এখন ঘুমো, আর কথা নয়।” আমিনাও কিছু কিছু বুঝতে পারেন যে আঘাতের ও রক্তপাতের ফলে এমন কোন একটা প্রক্রিয়া ঘটে গেছে রসুলের মধ্যে যার ফলে হঠাৎ মাকে কাছে পাবার ঝোক জাগায় নিজেকে সামলে রাখতে অনেক চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পেরে ওঠেনি।