পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৪৬ মানিক গ্ৰন্থাবলী পরম প্ৰমাণকে শেষ বলে ধরে না নিয়ে ? সাধারণ পতিপ্ৰাণা বৌ বলে সুধাকে জানত অক্ষয় । তাকে অসাধারণ সে ভাবতে পারে না এখনো । কিন্তু জীবনে আজ প্রথম জীবন-যুদ্ধে সাধারণ একটি নারীর স্বাভাবিক সংগ্রাম-শক্তির স্বরূপ আঁচ করে সে স্তম্ভিত, অভিভূত হয়ে যায়। ‘বিশ্বাস হচ্ছে না বুঝি তোমার ? “হচ্ছে বৈ কি, বাঃ ! খাও।” ‘সত্যি বলছি, খাইনি আজ। তোমার কাছে কিছু গোপন করব না। খাইনি বটে, কিন্তু তাতে আমার বাহাদুরী নেই। খাব না বলেছিলাম বলে খাইনি, তা সত্যি নয় । খাবার জন্য হোটেলের দরজা পৰ্যন্ত গিয়েছিলাম। অন্য দিনের চেয়ে বেশীই হয়তো আজ খেতাম সুধা । কিন্তু এমন ব্যাপার আজ দেখলাম, যাদের মেয়ে-শোকা ভাবপ্রবণ ফাজিল ছোকরা বলে জানতাম, তাদের এমন অদ্ভুত মনের জোর দেখলাম, আমি একেবারে থাতমত খেয়ে গেলাম সুধা। বুঝলাম যে, আমি যা ভাবি সব ভুল। মদ খেতে হোটেলের দরজা পৰ্যন্ত গেলাম, কিন্তু তখনো ভাবছি, গুলি খেলে মরতে হবে জেনেও সাধারণ একটা ছেলে যে গুলি খাবার জন্য তৈরী, ওটা কিসের নেশা ? মদ না খেয়েও যদি মানুষের ও-রকম নেশা হ’তে পারে, আমি তবে কেন বোকার মতো গাটের পয়সা খরচ করে এই সস্তা বিশ্ৰী নেশা করি। ওই ছেলেগুলোর জন্য আজ খেতে পারলাম না । আমার মনের জোরের জন্য নয় । “বেশ তো, বেশ তো, সুধা বলে শ্ৰান্ত-ক্লান্ত ব্যাহত গলায়, “শুনব’খন সব কথা কাল । খেয়ে নাও ।” অক্ষয় স্তম্ভিত হয়ে থাকে । সুধা এখনও বিশ্বাস করেনি। তার কথা আবোলতাবোল ঠেকছে। সুধার কাছে। তার কথা শুনে সুধার বিশ্বাস শুধু আরও দৃঢ় হয়েছে যে আজ সে অন্য দিনের চেয়ে বেশী মদ খেয়েছে, হৈ-চৈ করার স্তর পার হয়ে উঠে গিয়েছে দার্শনিকতার স্তরে ! “মদ খেলে মুখে গন্ধ থাকবেই সুধা।” ‘কেন ভাবছি। গন্ধ কেউ পাবে না। কাল সকালে সেই গাৰ্গল আর ‘গন্ধ পােচ্ছ ? - অক্ষয় মুখের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে সুধাকে নিশ্বাসের গন্ধ শোকায় ! আগেই এ প্রমাণ তার দেওয়া উচিত ছিল সুধাকে। ভাবপ্রবণ, অভিমানী, বিকারগ্রন্ত মন তার, তাই না সে চেয়েছে বড় বড় কথার প্যাচে সুধাকে বিশ্বাস করাতে- রাত দুপুরে যে ধরনের কথা বললে অজানা লোকেরও সন্দেহ হবে cळांक5 भाऊांब् ।