পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sty शॉनिक् वंशवनी “ত চাই না ? রসুলের মত চাই আগে ।।’ “আপনার সাথে হাসপাতালে যাব ? আমিনা যেন নিছক প্রশ্ন করেন তার ব্যাকুল আগ্ৰহ চেপে রেখে । “যাবেন ? ওসমান চিন্তিত ভাবে বলে, “হেঁটে যেতে হবে। রাস্তায় হাঙ্গামা চলছে। পরে নয় যাবেন। সেই ভাল। আমি দেখে আসি, ঘরে ফিরবার আগে আপনাকে জানিয়ে যাব কেমন আছে ।” “সেই ভাল। তবে ।” আমিনা জানেন ওসমানের ছেলে-হারানোর ইতিহাস, তারই রসুলের মতো জোয়ান ছেলে । দেশ-সেবার পথ নিয়ে কান্দেরের সঙ্গে তার মতান্তর ছিল বরাবর। বড় তেজী ছিল ছেলেটা। মুনত যা, করত তাই। খান বাহাদুরের শেষ বারের নির্দেশ মানতে তার নাকি দ্বিধা হয়েছিল, ওসমান নিজেই বলেছে আমিনাকে । তারপর হাসপাতালে মরবার তিন দিন আগে বাপের কাছে সে মাপ চেয়েছিল, বলেছিল, এস. ডি. ওর গাড়িতে চেপে আমাদের ফেলে খান বাহাদুর পালালেন, গাড়ির পেছনের চাকা আমার ডান পাটী পিষে দিয়ে গেল, সে জন্য দোষ দিই না। প্রজাদের মারতে আমাদের পাঠিয়েছিলেন তা কি জানতাম ? আজ এসে প্রজাদের ক'জনের নাম করে বললেন কি, ওরা আমাদের মেরেছে বলতে হবে! তখন বুঝলাম ব্যাপারটা। প্ৰজার কেউ আমাদের মারেনি। যাদের নাম করলেন, আমি জানি তারা ভিন গায়ে কিষাণ-সভা করছিলেন। তোমার কথাই ঠিক হল। এবার বেরিয়ে তোমার কথা, জিয়াউদ্দীন সাহেবের কথা শুনিব, নিজে তলিয়ে বুঝব, তবে কিছু করব। মরবার তিন দিন আগে যে ভাষায় যে ভাবে কথাগুলি সে বলেছিল, ওসমানের মুখে শুনে, হয়তো ছেলেহারা ওসমানের মুখে শোনার জন্যই, মনে আমিনার গাথা হয়ে আছে মুখস্থ করা ইস্তােহারের মতো। ছেলে বঁাচবে এটাই জানা ছিল ওসমানের । ছেলে মরবো, তিন দিনের মধ্যে মারবে, জানা ছিল না তার। সমবেদনায় বুক ভরে গিয়ে আমিনার চোখের জল উপচে পড়তে চায় । তারা কথা বলছে, ওসমান উঠি উঠি করছে, রসুলের খবর জানাতে সীতা আসে। সমস্ত রাস্তা সীতা ভাবতে ভাবতে এসেছে ঠিক কি ভাবে মার কাছে হাসপাতালে ছেলের অবস্থার কথা বলে মার মনে ছেলের সম্বন্ধে কতখানি আশা আর কতটুকু ভয় জাগানো চলে, যা সঠিক । রসুল মোটামুটি ভাল আছে, এবং ভাল সে দু’চার দিনের মধ্যে হয়ে উঠবে, এটাই হল প্ৰধান কথা। কিন্তু ভয়েরও