পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

श्रूि Y Net নাচাচ্ছি। একেবারে বিশ্বাস জন্মে গেছে।” হেমন্তের কথায় নিরুপায়ের আপসোস ফুটে ওঠে, “আমরা কি করব! কাল রাত্রে মার সঙ্গে কথা কয়ে কত খুন্সী হয়ে ছিলাম। সকালে পাচ মিনিটে মনটা বিগড়ে দিলেন। ঠিক কথাই বলেছ তুমি, মানুষ এক দিনে বদলায় না।” “না হেমন্ত’, সীতা মাথা নাড়ে, “আমরা কি করব বলে উড়িয়ে দিলে চলবে না। মাসীমাকে সময় দিতে হবে।’ “মানে ?” “মানে মাসীমাকে বুঝে উঠতে, সয়ে নিতে সময় দিতে হবে। কাল আমিও চটে গিয়েছিলাম মনে মনে, ছেলে-মেয়েদের পঙ্গু করে রাখতে চায়। এ কেমন অন্ধ স্নেহ । কিন্তু চটলেও মনটা খচখচ করছিল, কি যেন ভুল হচ্ছে। ভেবে দেখলাম, মাসীমার স্নেহ অন্ধ হোক, মোহগ্ৰস্ত হোক, তুমি তা উড়িয়ে দিতে পার না হেমন্ত । আমিও পারি না । অবশ্য বিশেষ অবস্থায় বড় দরকারে এসব স্নেহমমতার ব্যাপার নিয়ে মাথা ঘামালে চলবে না। আমাদের । সে আলাদা কথা । সে কারণ ভিন্ন। বড় ব্যাপারে ঘরোয়া লাভক্ষতির হিসাব বাদ দিতেই হয়। কিন্তু এখানে তো কথাটা ঠিক তা নয়। তোমার আমার বন্ধুত্ব নিয়ে যত গণ্ডগোল। কাজেই, মাসীমা অন্যায় করলেও তার স্নেহকে অবজ্ঞা করা যায় না, তঁকে শাস্তি দেওয়া যায় না । বিশেষ করে আমরা যখন জানি, মাসীমাকে একটু প্রশ্রয় দিলে, একটু সময় দিলে উনি সামলে উঠতে পারবেন। 7 মাসীমা স্বার্থপর নন, তোমাদের নিয়েই ওঁর স্বাৰ্থ । আমাকে নিয়ে ওঁর হয়েছে মুশকিল। এটা ওঁর দুর্বলতা, অন্যায়, তা বলব। কিন্তু দুর্বলতাটা জয় করার সময় আর সুযোগ ওঁকে না দিলে সেটা আমাদের অন্যায় হবে । তোমাকে তাই একটা কথা বলতে চাই।” ‘বলে ।” “কিছু দিন তুমি আমার সঙ্গে মেলামেশা একেবারে কমিয়ে দাও।” 'कठ नि ? “তোমায় আমি কেড়ে নিয়ে বশ করেছি এ ধারণাটা মাসীমার যদিন না। কাটে। ঔষু মেলা-মেশা কমানো নয়, তোমার চাল-চলন থেকে মাসীমা যেন আবার ধারণা না করে বসেন, মিশতে না পেয়ে আমার জন্য তোমার বুক ফেটে যাচ্ছে! এটাও তোমার খেয়াল রাখতে হবে। তাই বলে এমন ভাবও দেখিও না যেন সীতা বলে কেউ ছিল তুমি তা শ্ৰেফ ভুলে গেছ-মাংসীমা তা’হলে ভাববেন একটা খেলা করছি আমরা ওঁর সঙ্গে ।”