পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sey शांनिक @छांदळे এমনি করে নড়েচড়ে কয়েক বার। দু’বার কাসে রক্ত তুলে। তারপর নিম্পন্দ হয়ে যায়। তেরটি শিশু তাকে ধরাধরি করে গলির ভেতরে নিয়ে গিয়ে বাড়ির সামনের প্ৰথম যে বারান্দা মেলে তাতে শুইয়ে দেয় । অনুরূপ তখন ধৈৰ্য হারিয়ে ছেলের খোজে। গলি দিয়ে এগিয়ে আসছিলেন । সাড়ে আটটা বাজে, অজয় এখনো স্নান করতে গেল না। বাড়ির সামনে রাস্তায় দাডিয়ে সেই যে কথা আরম্ভ করেছিল, সুধীর আর নিরঞ্জনের সঙ্গে বাজার থেকে ফিরে, এখনো মশগুল হয়ে কথাই বলে চলেছে। যেন ভুলে গিয়েছে যে দর্শটায় ওর আপিস, বাড়ি থেকে বেরিয়ে আপিসে পৌছতে এক ঘণ্টার কম লাগে না । হাওড়া ব্রিজ পর্যন্ত হেঁটে না গিয়ে আজ ট্রামে বাসে যাবে। যদি ভেবে থাকে, তা ও ভাবুক, কারো তাতে কিছু বলার নেই, মাঝে মাঝে দু'একদিন এইটুকু পথ হাঁটার বদলে সখ করে মিছিমিছি ট্রামে বাসে কটা পয়সা বাজে খরচ যদি করতে চায় কেউ তাতে কিছু মনে করে না । কিন্তু এখন স্নান করতে না গেলে ট্রামে বাসে পয়সা নষ্ট করেও যে আপিসে লেট হয়ে যাবে সেটা তো খেয়াল থাকা দরকার ওর । মৃদু অস্বস্তি বােধ করে বাড়ির লোক, মাধু ছাড়া। ওদের সঙ্গে এত কথাই বা কিসের সবাই ভাবে, মাধু ছাড়া। ক্লাসফ্রেণ্ড ছিল বটে, এখন তো আর নয়। ওরা কলেজে পড়ছে, অজয় চাকরি করছে। এত ভাব ওদের সঙ্গে এখন না রাখাই উচিত । অনন্ত সইতে না পেরে মেয়েকে বলে, “মাধু, আরেকবার ডাক।” “এই তো ডাকলাম।” “আবার ডাক। কটা বাজল ? আটটা পয়ত্ৰিশ ! ডেকে বল পৌনে নটা হয়ে 6छ् ।।' ‘বলেছি তো একবার। দাদার কি সে হিসেব নেই ভাব ? অতি খোচানো ভালো নয়। মাধু, শান্ত গলাতে বলে। আশ্চর্য রকম সে শাস্ত হয়ে গেছে আজকাল । সেরকম এলেমেলো মেজাজ আর নেই, একের পর একটা বিয়ের চেষ্টা ফসকে যাবার ক বছর যেমন ছিল। সে যেন ওদিকের সব আশা ভরসা মুচড়ে ফেলে হাল ছেড়ে দিয়ে সুস্থ হয়েছে। কপালে চাপড় মেরে অনন্ত বলে, “তুই আর আমাকে উপদেশ দিসনে মাধু, দিসনে। গলায় দড়ি জোটে না তোৱ ?