পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झि S}. বাড়িতে পরিচয় করিয়ে দেবে বলে ছিলে, আজ নিয়ে চলো। কাল থেকেই কাজ করব, চায় তো ওবেলা থেকেই। কিন্তু ভাবছি কি?’, ‘মধু মৃদু সংশয়ের হাসি হাসে, “আমার রান্না কি রুচিবে ওদের, এত বড়লোক মানুষ !” অনন্ত অপলক চোখে চেয়ে থাকেন। তার মত নেই, তিনি বারণ করেছেন। তবু তাকে একবার জিজ্ঞাসা পর্যন্ত না করে তারই সামনে দাড়িয়ে মেয়ে তার অনায়াসে লোকের বাড়ি রাধুনির কাজে ভর্তি করিয়ে দেবার জন্য অনুরোধ করছে দাদার বন্ধুকে । লজ্জা নেই, সঙ্কোচ নেই, অপমান বোধ নেই। অজয় চোখ পেতে রাখে মেঝেতে। লাল সিমেন্টের মেঝে দু'বেলা মুছে মুছে তেল চকচকে করে তুলেছে মাধু। মাধু ঝি হােক। রাধুনি হােক এতে তার লজ্জা নেই। সে থাকতে ওকে রাধুনি হতে হয় এমন সে নিরুপায়, এই ক্ষোভে কান দুটি তার বঁা द कgद्ध । “আজ তো হবে না মাধু।” “রাধুনিদের কাজে যাওয়াও বারণ নাকি আজ ? নিরঞ্জন হাসে। - “আমরা এখুনি বেরিয়ে যাব। আজ কি নিশ্বাস ফেলার সময় আছে ? দশটায় এখানে একটা মিটিং আছে, তারপর বড মিটিং, তাছাড়া আরও কত কাজ ।” “তোমরা মানে ? দাদাও যাচ্ছ নাকি ? চলে। তবে আমিও বেরোই তোমাদের সঙ্গে । একটু দেখে শুনে আসি।” মাধুর চোখ জ্বলজ্বল করে। — বাড়িতে মন টিকিছে না। আজ। খালি মনে হচ্ছে কোথায় যাই, কি করি । হাঙ্গামার ভাসা-ভাসা এলোমেলো খবর তারা শোনে গাড়িতেই । কাল থেকে গুলি চলছে কলকাতায়, চারিদিকে লড়াই শুরু হয়েছে। সারা শহরে, ভীষণ কাণ্ড । কালকের ঘটনার বিবরণ বেরিয়েছে আজকে ভোরের কাগজে, তাদের গাড়িতেই পােচ সাতজন বাংলা কাগজ কিনে পড়েছে এবং সকলকে পড়ে শুনিয়েছে । আজকের খবর সব ছড়িয়েছে মুখে মুখে। কলকাতার যত কাছে এগিয়ে এগিয়ে স্টেশনে গাড়ি থেমেছে তত ঘন আর ফলাও হয়েছে খবর। ‘শহরেও হাঙ্গামা, কলকাতা শহরে ? গণেশের মা বিচলিত হয়ে বলেছে, ‘গণশার যদি কিছু হয় ?” p যাদব বলেছে তাকে ভরসা দিয়ে, ‘গণশার কি হবে ? লাখো লাখো লোক