পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Yr U মানিক গ্ৰন্থাবলী গামছা কঁধে ক্রিঙ্কুপের বাবা অবিনাশ তেলের খোজে রান্নাঘরে আসিলেন। ব্যন্ত হইয়া বলিলেন, এখন আর চা খেতে হবে না, চান করে ফ্যাল। সাড়ে আটটা বেজে গেছে, ন’টা পঁচিশের গাড়ীটা ধরতেই হবে। আজ ফিরিবার সময় মানখিলিটা করে ফেলিস কিন্তু, ভুলিস না।” ক্রিটুপ বলিল, “আমি যাব না। বাবা।” ‘যাবি না ? যাবি না মানে ? ‘5ांकईी कद्मा आभांद्म 6°iांयांgद ना ।? অবিনাশ তেলের বাটি হইতে হাতের তালুতে তেল ঢালিতেছিলেন, খানিকটা তেল মাটিতে পড়িয়া গেল। মার হাতের খুন্তি আবার কড়াই-এর অনেকখানি উচুতে নিশ্চল হইয়া রহিল। প্ৰথম কথা কহিলেন অবিনাশ। -“কি বলছিস্ তুই পাগলের মত ? এমন সময় রাণুর হাত ধরিয়া প্ৰভা সেখানে আসিল। রাণুর গালে ত্ৰিষ্টুপের আঙ্গুলের দাগ স্পষ্ট হইয়া ফুটিয়া উঠিয়াছে। মেয়েটা ফুপাইয়া ফুপাইয়া কাদিতেছিল, ঠিক স্বপ্নে ক্রিস্টুপের ছেলের শোকে কঁাদার মত। প্রভার মুখ মেঘে। ঢাকা আকাশের মত অন্ধকার । মেয়ের গালটি সকলের সামনে ধরিয়া সে বলিল, “দ্যাখে বাবা, কেমন করে মেরেছে মেয়েটাকে । বেলা হয়ে গেছে, আজ আবার আপিস যাবে, আমি তাই মেয়েটাকে বলেছিলাম তোর মামাকে ডেকে দে তো রাণু। ও গিয়ে যেই ডেকেছে, অমনি মেরে এবে বারে খুন করে দিয়েছে। ওর কি দোষটা ? তোমরাই বল ওর দোষটা কি ? বিশেষ দু'টি খেতে পরতে দিচ্ছ বলে-” প্ৰভা নিজেও ফু পাইয়া কঁাদিয়া উঠিল। প্রভার নালিশ ও কান্না সকলের গা-সওয়া হইয়া গিয়াছে, বিশেষ বিচলিত কেউ হয় না। সারাদিনে অন্ততঃ একবার প্রভার নালিশ ও কান্না না শুনিলেই বরং সকলে একটু আশ্চৰ্য হইয়া ভাবে, কি হইয়াছে প্রভার আজ ? তবে এক হিসাবে প্রভার মন খুব উদার, একটি ধমকেই সে সন্তুষ্ট হয়, কান্না থামিয়া যায়, অ্যান-ঘ্যান প্যান-প্যান করে না । কেবল ধমকটা দিতে হয়। কতকটা এই ভাবে : চুপ কর প্রভা, কি বকছিস তুই পাগলের মত ? তুই কি পর এসেছিস এ বাড়ীতে, কুটুম এসেছিস ? আজ কেউ ধমক দিল না, কিছুই বলিল না। প্ৰভা আশ্চৰ্য হইয়া সকলের মুখের দিকে চাহিতে লাগিল। তার মেয়ের গালে চড় মারার চেয়ে অনেক বেশী গুরুতর কিছু ঘটিয়াছে বুঝিতে পারা মাত্র কৌতুহলের বন্যায় অভিমান ভাসিয়া গেল।