পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Revo शांनिक @jहांदणीौ পেরা যেন ধাধা লাগিয়া গেল। এক বিষয়ে এত, তীক্ষ মান অপমান জ্ঞান, এত তেজ, অথচ সবটাই বিকার। কতকগুলি বিষয়ে মানুষটা সুস্থ ও স্বাভাবিক, আবার কতকগুলি বিষয়ে এমন খাপছাড়া বলিবার নয়। বেকার জীবন কি এমনি সব মানসিক রোগের সৃষ্টি করে ?- অবিনাশ আনন্দ ও আবেগে রমেশের হাত চাপিয়া ধরিলেন। — ‘না বাবা, অপমান কিসের । এখন তো দরকার নেই, দরকার থাকলে তোমার কাছ থেকে নিতাম বৈকি। নিজে চেয়ে নিতাম।” খোচাটা বিধিল না দেখিয়া রমেশ বোধ হয় একটু ক্ষুন্ন হইয়াই চলিয়া গেল। কোথায় কি কাজ সে পাইয়াছে, এত টাকা হঠাৎ সে কোথা হইতে পাইল, এ সব স্পষ্ট করিয়া কিছুই তার কাছে জানা গেল না। প্রশ্ন করিয়া পাওয়া গেল শুধু ভাসা ভাসা, জবাব। ঠিক চাকরী নয়, এজেন্সীর মত কি যেন তার একটা জুটিয়াছে। ত্ৰিষ্টুপের মনে আঘাত লাগিল বৈকি! স্বামীর ধার করা পচিশটা টাকা তার গায়ের উপর ছুড়িয়া দিয়া প্ৰভা তাকে যে ভাবে আঘাত করিতে চাহিয়াছিল। সে ভাবে নয়। রমেশের অবস্থার আকস্মিক পরিবর্তনটাই তাকে যেন ঝাঁকি দিয়া গেল। রমেশ অপদার্থ, জীবনে কোনদিন তার অভাব ঘুচিবে না, এই ছিল মানুষটা সম্বন্ধে তার ধারণা। কেবল পরিবর্তন নয়, নিজের অবস্থায় খুব ভাল রকম পরিবর্তনই সেই রমেশ করিয়াছে। তার কাছে মনে হইতেছে আকস্মিক, কিন্তু এ উন্নতি হয়তে রমেশের অনেক দিনের চেষ্টার ফল। স্বামীর সঙ্গে বিদায় হইয়া যাওয়ায় তিন চার দিন পরেই প্ৰভা একবার এ বাড়ীতে আসিয়াছিল, যাওয়ার দিন যে কাণ্ড করিয়া গিয়াছিল। সেজন্য সকলের হাতে পায়ে ধরিয়া ক্ষমা চাহিতে । ক’দিনের মধ্যে গায়ে গয়না চাপানোর স্বযোগ সে পায় নাই, তবে নূতন যে কাপড়খানা পরিয়া আসিয়াছে তার দাম অনেক । তাকে পৌছিয়া দিতে গোল ক্রিষ্টপ। প্ৰভাই এক রকম জোর করিয়া ধরিয়া লইয়া গেল। রমেশ একটি সুশ্ৰী নূতন বাড়ী ভাড়া করিয়াছে। ইতিমধ্যে কয়েকটা আসবাব কিনিয়াছে দামী দামী । এতদিনের পুরানো জিনিষ-পত্রের গায়ে আঁটা দারূিদ্র্যের পরিচয়ের মধ্যে স্বচ্ছলতার আরও অনেক চিহ্ন দেখা দিতে আরম্ভ করিয়াছে। প্রভার কপাল ফিরিয়াছে ভাবিয়া একদিকে ত্ৰিষ্টপের বুকটা যেমন হাল্কা হইয়া গেল, - অন্যদিকে রমেশের মত মানুষ যা পারিয়াছে নিজে সে তার চেষ্টা পৰ্যন্ত শুরু