পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

क्रिस्छशनेि S. বালি করে এনে বিরজা দেখল রঘু বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে গেছে। ষ্টেশনের কাছে বাজার, সেখানে সবগুলি দোকান খুজে ফুড মিলল না। হাফেজের মনোহারী দোকান আর রামশরণের ডিস-পেনসারীর সমান কিছু এ অঞ্চলে নেই। ফুডটা দু’জনের দোকানেই ছিল, কিন্তু বিক্রী করার গরজ ছিল না। মোটেই। এসব জিনিসের দাম তখন দিন দিন চড়ছে চোরাবাজারে । “এ যে মুস্কিল হ’ল গৌর ? ‘সদরে গেলে হয় ।” দুর্গাকে দেখে অবধি গৌরাঙ্গের চােখ দুটি ছলছল করছিল। বয়স তার বেশী হয় নি, যদিও সাধারণ হিসাবে বিয়ের বয়স পার হয়ে গেছে অনেকদিন । রঘু সদয় তিনুদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যতই কাবু হয়ে পড়ার ভান করুক, বিয়ে করতে পারেনি বলে সংসারের ভাবনাগুলি তার এখনো খুব হাল্কা । এক মা, এক বিধবা ভাজ আর তিন ভাইবোনের ভার অবশ্য কম নয়। তার মত গরীবের পক্ষে, এই ভারেই সে নির্ঘাত কাবু হয়ে পড়বে কয়েক বছরের মধ্যে, যদি না তার আগেই ওদের মরণ বঁাচন সম্বন্ধে উদাসীন হতে শিখে যায়। গৌরাঙ্গের চেয়েও অনেক বেশী কোমল হৃদয় যুবকের যে উদাসীনতা আসতে দেখা গেছে। বৌ আর ছেলে মেয়ের ভালমন্দ সম্বন্ধেও মানুষের উদাসীনতা আসে, কিন্তু সেটা সাধারণত জীবনীশক্তি ক্ষীণ হয়ে এসে ভোতা নির্বোধি হয়ে যাবার লক্ষণ ।। সদায়ের ভাই হৃদয়ের যেমন হয়েছে, যোয়ান মন্দ মানুষটার বেঁচে থাকতেই যেন গা নেই। সদরে যাবার আগে পটলের পরামর্শে রঘু নীলকণ্ঠের কাছে গেল। গৌরাঙ্গও তার সঙ্গে গেল। এ বাড়ীতে কিছুদিন থেকে সে দুধ যোগান দিচ্ছে, এই সম্পর্কের জোরে ফুড সংগ্ৰহ সম্পর্কে বাবুর-কৃপা দাবী করা হয়তো একটু জোরালো হবে। পটল আগেই শিখিয়ে দিয়েছিল সে শুধু কঁাদাকাটায় ফল হবে না, একেবারে নগদ টাকা সামনে রেখে বাবুকে ধরে পড়তে হবে। দুটি টাকা নীলকণ্ঠের পায়ের কাছে রেখে কঁাদাকাটার বদলে গম্ভীর উদাস কণ্ঠে রঘু তার নিবেদন জানােল। প্যান প্যান করা তার আসে না। গৌরাঙ্গের কথাগুলি বরং শোনাল ঢের বেশী করুণ যেভাবে হোক বাবু যদি যোগাড় করে না দেন তাহলে রঘুর ব্যারামী বৌটা যে মরে যাবে, এইটুকু জানাতে গিয়েই গলাটা ধরে qa \53 i