পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R 0 भांनिक (iहादकी নীলকণ্ঠ বৈঠকখানায় তামাক খেতে খেতে এই সকাল বেলাই অর্ধেক চোখ বুজে স্বপ্ন দেখছিল,- টাকার স্বপ্ন। দু'জনের কথা শুনে সজাগ ও ক্ষুব্ধ হয়ে বলল, “তােরাও মজেছিস ? বলি বাবা, রোগ ব্যারাম কি আগে ছিল এদেশে, না, বােতল ভরা ফুড না খেয়ে রোগ সারেনি কারো ? বাপ ঠাকুর্দা তোদের চােখে দেখেছিল না নাম শুনেছিল ফুডের ?” রঘু সাগ্রহে বলল, “আমিও তো তাই বলি। ডাক্তারবাবু, কিনা ফুড ফুড করে খ্যাপা তাইতে নিরুপায়।” কাল থেকে রঘুর মনে হচ্ছিল ফুডটা নিয়ে চরম দায়ে ঠেকেছে। ফুডটা দুর্লভ হওয়ায় তার কেমন ধারণা জন্মে গিয়েছিল, এই বস্তুটি সংগ্ৰহ করার উপরেই দুৰ্গার বঁাচন মরণ নির্ভর করছে, ফুড খেলে দুৰ্গা বঁাচবে, নইলে বাচবে না । নীলকণ্ঠের কথায় দায়বোধটা একটু হাল্কা হওয়ায় স্বস্তি পেল। “ডাকিস কেন ডাক্তাব ? ও হল বিলিতী চিকিচ্ছে, বিলেতের লোকের জন্যে । যেমন দেশ, যেমন লোক, তেমনি হবে চিকিচ্ছে, এই হল রীতি । আমরা আর সায়েবরা সমান নাকি ? ওরা হল গে মেচ্ছ, বর্বর-দেহসর্বস্ব জাত । একটা লোক প্ৰেমভক্তির সন্ধান জানে। ওদেশে ? একটাও না ! ওদের চিকিচ্ছে এদেশে খাটবে কেন বাৰু? এদেশের ডাক্তারী নেই ? আয়ুৰ্বেদ হয়নি এদেশে ? কোবরেজ মশায়কে ডাকতে পারলে না ।” “আজ্ঞে ভুল হয়ে গেছে। ফুডের বদলিতে তালি কি খাওয়াই ? রঘুৱ এ প্রশ্নের জবাব নীলকণ্ঠ দিতে পারল না। বোতল ভরা ফুডের চেয়ে শতগুণে শ্রেষ্ঠ পথ্য আছে ঢের, কিন্তু নীলকণ্ঠ কি মুখস্থ করে বসে আছে তার নামগুলি ? কবিরেজকে জিজ্ঞেস করলে জানা যাবে। শুনে রঘু আবার দমে গেল । দায়বোধটা ভারি হয়ে উঠল আবার । “তালি ওই এইগোটা যোগাড় করে দেন। বাবু।” ‘আমি কোথা যোগাড় করব ফুড ? নীলকণ্ঠের মেয়ে সুনীতি ধিনিক ধিনিক নাচের ভঙ্গিতে অকারণেই ঘরে এসেছিল, এবার সে ম্যাট্রিক পাশ করেছে। একটা ফুডের অভাবে একজনের বেী মরে যাবে শুনে মনটা কেঁদে উঠেছিল বলে নয়, ভেবে চিন্তে কথা বলা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না বলেই সে বলে ফেলল, “আমাদের তো দুটাে আছে, একটা দিয়ে দাও না বাবা ?” মেয়েকে ধমক দিয়ে ভেতরে পাঠিয়ে নীলকণ্ঠ বলল, “ওর একটাও দিতে