পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R\) ॉनिक यंहांदर्की থাটের বিছানায় তিনটি মাথার বালিশের উপর একটি পাশবালিশ চাপাইয়া আধশোয়া অবস্থায় রাজকুমার বসিয়া ছিল। তৃষ্ণায় মুখ শুকাইয়া গিয়াছে। মাথা ধরিলে রাজকুমারের এরকম হয়। সাধারণ জল, ডাবের জল, সরবৎ কিছুতেই তার তৃষ্ণা মেটে না। এটাও তার জীবনের একটা দুর্বোধ্য রহস্য। শুকনো মুখের অপ্ৰাপ্য রস গিলিবার চেষ্টার সঙ্গে চাষার গরু তাড়ানোর মত একটা আওয়াজ করিয়া সে সোজা হইয়া উঠিয়া বসিল । চারকোণা মাঝারি আকারের ঘর, আসবাব ও জিনিষপত্রে ঠাসা । এই ঘরখানাই রাজকুমারের শোয়ার ঘর, বসিবার ঘর, লাইব্রেরী, গুদাম এবং আরও অনেক কিছু। অনেক কালের পুরাণো খাটখানাই এক চতুর্থাংশ স্থান-আরও একটু নিখুঁত হিসাব ধরিলে , স্থান, রাজকুমার একদিন খেয়ালের বশে মাপিয়া দেখিয়াছে, - দখল করিয়া আছে। বই বোঝাই তিনটি আলমারি ও একটি টেবিল, দাড়ি কামানোর সরঞ্জাম, ওষুধের শিশি, কাচের গ্লাস, চায়ের কাপ, জুতোপালিশের কৌটা, চশমার খাপ প্রভৃতি অসংখ্য খুঁটিনাটি জিনিষে বােঝাই আরেকটি টেবিল, তিনটি চেয়ার, একটি ট্রাঙ্ক এবং দুটি বড ও একটি ছোট চামড়ার সুটকেশ, ছোট একটি আলনা, এ সমস্ত কেবল পা ফেলিবার স্থান রাখিয়া বাকী মেঝেটিা আত্মসাৎ করিয়াছে । তবে রাজকুমার কোনরকম অসুবিধা বোধ করে না । এ ঘরে থাকিতে তার বরং রীতিমত আরাম বোধ হয়। ঘরখানা যেমন জিনিষপত্রে বোঝাই, তেমনি অনেক দিনের অভ্যাস ও ঘনিষ্ঠতার স্বস্তিতেও ঠাসা । এই ঘরে মাথাধরার যন্ত্রণা সহ্য করিবার মধ্যেও যেন মৃদু একটু শান্তি আর স্বাস্তুনার আমেজ আছে । জগতের কোটি কোটি ঘরের মধ্যে এই চারকোণা ঘরটিতেই কেবল নিবিকার অবহেলার সঙ্গে গা এলাইয়া দিয়া সে মাথার যন্ত্রণায় কাবু হইতে পারে। মাথাধর বাড়িবার আগে এবং স্থায়ীভাবে গা এলানোর আগে কয়েকটি ব্যবস্থা করিয়া ফেলা দরকার। মনে মনে রাজকুমার ব্যবস্থাগুলির হিসাব করিতে লাগিল । রসিকবাবুর বাড়ী গিয়া গিরীন্দ্ৰনন্দিনীর মাকে বলিয়া আসিতে হইবে, আজ রাত্রে তাদের বাড়ী খাওয়া অসম্ভব। অবনীবাবুর বাড়ী গিয়া মালতীকে বলিয়া আসিতে হইবে, আজ সে তাকে পড়াইতে যাইতে পরিবে না । স্যার কে, এল-এর বাড়ী গিয়া রিণিকে বলিয়া আসিতে হইবে, আজ তার সঙ্গে কারো পাটিতে যাওয়া বা জলতরঙ্গ বাজনা শোনানোর ক্ষমতা তার নাই। কেদারবাবুর বাড়ী গিয়া সরাসীকে