পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R9 शांनिक &jहांदव्ौ কারো বাড়ী যাওয়ার অজুহাত তো তার নাই! যার কাছেই যাক, সে ভাবিবে ভিখারী আসিয়াছে : রাজাকে ভিখারী সাজিয়া আসিতে দেখিয়া শুধু কথা ও হাসি ভিক্ষা দিতেই কত সে কাৰ্পণ্য করিবে কে জানে! ওরা কেউ তো বুঝিবে না কি ভাবে সারাদিন ঘরে আটক থাকিয়াও একই সে অনেক হইয়া নিজের জগৎ ভরিয়া রাখিয়াছিল, আবার কি ভাবে সে এক হইয়া গিয়াছে, চার জনের একজনের সঙ্গেও দুটি কথা বিনিময়ের সুযোগ পৰ্যন্ত নাই বলিয়া মন তার কেমন করিতেছে। না বুঝিলে কি আসিয়া যায় ? নিজেকে সে যে ভুলিতে আসিয়াছে একথা মনে করার বদলে যদি অন্যকে ভুলাইতে আসিয়াছে ভাবে, কি ক্ষতি আছে তাতে ? মনে মনে না হয় ‘ওরা কেউ একটু হাসিবে, না হয় বলিবে মনে মনে, হে আত্মভোলা মহাপুরুষ, তোমার এত দিনের উদাসীন অবহেলার ফাকিটা তবে আজ ধরা পড়িয়া গেল ? হে সিনিক, শেষ পর্যন্ত আমিই তবে তোমাকে রোমান্সের মধুতে ডুবাইয়া দিয়াছি ? এই হাসি হাসিবার এবং এই কথা বলিবার অধিকার ওদের চিরন্তন, একদিন না হয় অধিকারটা সে খাটাইতে দিল ? কিন্তু মন মানে নাই রাজকুমারের। উপযাচকের কলঙ্ক জুটিবার ছেলেমানুষী ভয়ের জন্য নয়, এই কলঙ্ক যে আরোপ করিবে তারই ভয়ে। যে জটিল সম্পর্ক দাড়াইয়াছে ওদের সঙ্গে তার জন্ট খুলিবে না, কেউ সহজ হইতে পরিবে না। এক থাকিতে না পারিয়া সে ছুটিয়া আসিয়াছে বটে, কিন্তু এ একাকীত্ব যে তার কাছে অর্থহীন, দুর্বোধ্য রহস্যের মত, কাছে বসিয়া কথা বলিলে, কাছে আসিয়া এক হওয়ার খেলা খেলিলে যে এই একাকীত্বের দুঃখ তার ঘুচিবে না, এ সত্য অন্যের কাছে কোন মতেই সত্য হইয়া উঠিবে না । মানুষ দুটি থাকিবে আড়ালে, একের সভ্যতা শুধু পীড়ন করিবে অপরকে । কেবল মালতীর কাছে যাওয়ার একটা বাস্তব অজুহাত আছে। মালতীও অনেক কিছু মনে করিবে সন্দেহ নাই, কিন্তু পীড়ন করার সুযোগ পাইবে না। বেতন পায় তাই বাদল অগ্ৰাহা করিয়া পড়াইতে আসিয়াছে, এই বর্ম গায়ে আঁটিয়া কিছুক্ষণ মালতীর সঙ্গে কাটাইতে পরিবে । তা ছাড়া, কথা আর হাসি ওখানে দরকার হইবে না, বাড়তি অস্বস্তির যন্ত্রণা জুটিবে না। পড়ানো তার কাজবেতনভোগীর নিছক কর্তব্য পালন করা। সেটুকু করিলেই চলিবে। বাহিরে আবার যখন বৃষ্টি নামিল, ঘরের মধ্যে রাজকুমার বোধ হয় তখন ভুলিয়াই গেল কোথায় বসিয়া কাকে সে পড়াইতেছে। শুকনো কথার শব্দ জলের