পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

t মানিক গ্ৰন্থাবলী থেকেও না থাকার সামিল হয়ে যায়। মেয়েদের ব্যাপার অন্যরকম। তারা দেহসর্বস্ব বলে ? 'না, তাদের দেহ অন্যরকম বলে। দেহের অনুভূতি অন্য রকম বলে। দেহের উপযোগিতা অন্যরকম বলে। আরও অনেক কিছু আছে। বিদায় দেওয়ার সময় সরসী বলিল, কাল তোমার লিষ্টের সকলকে আসতে বলব, তুমি কিন্তু ওদের জানিও না সখটা তোমার। গ্ৰপ ফটাে তোলার সখ আমার, তোমায় দিয়ে আমি ফটাে তোলাচ্ছি। বুঝতে পারছি ? পরদিন কালীকে সঙ্গে করিয়া রাজকুমার সরাসীর বাড়ী গেল ! তিনটি মেয়ে আসিতে পারে নাই। তবু চােব্দটি মেয়ে আসিয়াছে। কালী আর সরাসীকে ধরিলে ষোল জন। এতগুলি মেয়েকে একসঙ্গে পরীক্ষা করার সুযোগ পাইয়াও রাজকুমার খুসী হইতে পারিল না। এতগুলি দেহ আর মনের বৈশিষ্ট্য মিলাইয়া দেখা রাজকুমারের পক্ষেও সম্ভব ছিল না। শুধু কথা বলিয়াই সময় কাটিয়া গেল। জীবনে রাজকুমারের অনেকবার অনেমরকম বোক আসিয়াছে। এটা অবশ্য রাজকুমারের একচেটিয়া নয়, নেহাৎ গোবেচারী শ্লথ মানুষেরও বেঁক আসে। কোন কোন মানুষ ঝোঁকের মাথায় কখনো কোন কাজ করে না, ভাল কাজও নয়। দুঃখ আর অশান্তি দূর করিয়া পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে সুখী করার ঝোঁকও যদি এ সমস্ত মানুষের চাপে, যতক্ষণ ঝোক থাকিবে কিছুই তারা করিবে না। বিমাইয়া পড়া পৰ্যন্ত মনে মনে শুধু বিবেচনা করিয়া চলিবে কাজটা উচিত কি না। আর লাভ লোকসানের খতিয়ানটা কি এবং নিজের সংযমের বাহুল্যে গভীর আত্মপ্ৰসাদ অনুভব করিবে। সংযম যেন নিছক ধীরতা ও শৈথিল্য। হঠাৎ-জাগা সমস্ত ইচ্ছাকে রাজকুমার অবশ্য আমল দেয় না, পাগল ছাড়া সেটা কারো পক্ষে সম্ভবও নয়। তবে ঝোকের মাথায় কাজ করার স্বভাব তার আছে। অনেক পুরস্কার ও শান্তি, আনন্দ ও বিষন্নতা এমনিভাবে সে অর্জন <strict r এবার যে সৃষ্টিছাড়া খেয়ালটি তাকে আশ্ৰয় করিল, আবির্ভাবটা তার আকস্মিক নয়। তবু এ খেয়ালটি বোকের মতই প্ৰবল হইয়া উঠিল। প্ৰথমে মনের কোণে কথাটা একবার শুধু উকি দিয়া গেল, ভাঙ্গা মেঘের মত মনের আকাশের এক টুকরা অসঙ্গত আলগা চিন্তা। নিজের কাছেই যেন রাজকুমার লজা বোধ করিল। এসব চিন্তা কোথা হইতে ভাসিয়া আসে, আবার কোথায়