পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bलूका t VO e V রুক্মিণী নরম হইলেও এত সহজে রাজকুমারকে রেহাই দিতে পারে না । শিলং থেকে ফিরে একদিন আসতে পারতেন তো ? এবার আত্মরক্ষার দায়িত্ব রাজকুমারের, সে দুঃখের ভাণ করিয়া বলে, এমন ব্যস্ত ছিলাম, কি বলব আপনাকে । তা ছাড়া হঠাৎ গিয়ে আপনাকে বিরক্ত করতেও ভরসা পাইনে । - আচ্ছা, এবার হঠাৎ গিয়ে আমায় বিরক্ত করার নেমস্তন্ন করে রাখলাম। ভুলবেন না যেন। বলিয়া রুক্মিণী এতক্ষণ পরে ক্ষমার সহজ হাসি হাসিল। অর্থহীন দীর্ঘ ভূমিকার পর। রাজকুমার ভাবিতে লাগিল, সভ্যতার নামে এরা কি অসভ্যতাই শিখিয়াছে। প্ৰথমে দেখা হওয়া মাত্র এই হাসি হাসিলে কত সহজ হইয়া যাইত মেয়েটার সঙ্গে পরিচয় করার ইচ্ছা জাগানো । খানিক পরেই শ্যামল আসিল । ব্যস্তসমস্ত, উদ্বিগ্ন শ্যামল । এক ঘণ্টার বেশী দেৱী করিয়া ফেলার অপরাধে সে যেন নিজের মরণ কামনা করিতেছে। সঙ্গে তার বোন সুধা ও বৌদিদি ইন্দিরা । দু’জনের সাজ-সজ্জা একেবারে চমকপ্ৰদ। শ্যামলের যে মোটে ঘণ্টাখানেক দেরী হইয়াছে তাই আশ্চৰ্য্য । রাজকুমারকে দেখিয়া শ্যামলের মুখ অন্ধকার হইয়া গেল। রাজকুমার মালতীকে পড়ানো ছাড়িয়া দিয়াছে জানিয়া সে স্বস্তি পাইয়াছিল। রাজকুমার মাঝে মাঝে আসে তা সে জানিত কিন্তু সেদিন বর্ষা-সন্ধ্যার ব্যাপারটির পর রাজকুমারকে সে এ বাড়ীতে দ্যাখে নাই। রাজকুমার বলিল, কেমন আছ শ্যামল ? শ্যামল জবাব দিল না । প্রশ্নের জবাব না দিবার সাধারণ কারণ থাকা সম্ভব মানুষের । হয়তো শ্যামল শুনিতে পায় নাই। মেয়েদের বিয়েবাড়ীতে পৌছিয়া দিবার হাঙ্গামায় যে রকম ব্যতিব্যস্তই সে হইয়া পড়িয়াছে ! কিন্তু সেদিন মিটিং-এর কখাটা সকলের মনে ছিল। সকলেরই তাই মনে হইল, সেদিনের অপমানের জন্যই বুঝি শ্যামল রাগ করিয়া রাজকুমারের সঙ্গে কথা বন্ধ করিয়া দিয়াছে। মালতীই যেন বিব্রত হইয়া পড়িল সকলের চেয়ে বেশী । শু্যামলকে সে একপাশে ডাকিয়া নিয়া গেল । রাজুদার সঙ্গে কথা বল না ? না। ’ কেন ?