পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

फङ्कांत्र VS পৃথিবী অথবা স্বৰ্গ অথবা নরকবাসী কারো কাছে ? - যে অপরাধের অনুভূতি তাকে যন্ত্রণা দিতে পারে, যার প্রতিক্রিয়ায় জীবজগতে স্বাভাবিক নিয়ম অনুসারে কারও উপরে একটু বিদ্বেষের জালা অনুভব করিতে পারে ? রাগ নাই, অভিমান নাই। একটি মানুষের উপরেও নয়। জড় বস্তুকেও মানুষ কখনো হিংসা করে, হেঁচট লাগিলে অন্ধ ক্ৰোধে ইটের উপর পদাঘাত করে, কারাগারের লোহার শিক ভাঙ্গিয়া ফেলিতে চায়। কিন্তু মানুষ নিস্ক্রিয় নিজীব পুতুল হইলে একটি পুতুলের মুখ তার পছন্দমত নয় বলিয়া যতটুকু বিরক্তি বোধ করা চলিত, তাও সে বোধ করে না । মানুষের মনের অন্ধকার ও দেহের শ্ৰীহীনতার অপরাধ সে ক্ষমা করিয়াছে। মানুষ যে কৃপণ। তাতে তার কিছুই আসিয়া যায় না, কারণ, মানুষের কাছে সে কিছু চায় না । এই নির্বিকার ঔদার্য যেন জীবনের সেরা সম্পদ, কুড়াইয়া পাইয়াছে। দূর হইতে দিনের পর দিন শুধু চাহিয়া দেখিতে দেখিতে হঠাৎ একদিন ধনীর দুলালের খেলনাটি বস্তি-বাসী শিশুর হাতে আসিলে সে যেমন আনন্দে পাগল হইয়া ভাবে, জীবনে তার পাওয়ার আর কিছুই বাকি নাই, আৰ্য শান্তি আহরণের সৌভাগ্যে বিপরীত আনন্দের উন্মাদনায় রাজকুমারেরও তেমনি মনে হইতে থাকে, এবারে সে তৃপ্তি পাইয়াছে, সম্মুখে তার পরিতৃপ্ত জীবন। সকলে জিজ্ঞাসা করে – কি হয়েছে রাজু? ডাবি জিতেছি ? একে জিতেছি। - রাজকুমার দেখাইয়া দেয় নিজেকে, কখনো বুকের ডাইনে কখনো বায়ে আঙ্গুল ঠেকাইয়া । যে কাছে আসে। সেই পরিবর্তন লক্ষ্য করে, নদীতে জোয়ার আসার মত এত স্পষ্টভাবে সে জীবন্ত হইয়া উঠিয়াছে। মনোরমা বিস্মিত হয়, আশা করিবে: কি হতাশ হইবে ভাবিয়া পায় না । আশা ভঙ্গের ভয়টাই হয় বেশী। কালীর জন্য যদি বদলাইয়া গিয়া থাকে রাজকুমার, তাকে কিছু না বলিয়াই কি বদলাইত ? এখন শুধু এইটুকু আশা করা চলে যে তাকে কিছু না বলিলেও কালীর সঙ্গে হয়তো তার কোন কথা হইয়াছে, হয়তো অন্য কিছু ঘটিয়াছে। অন্য কিছু কি আর ঘটবে, হয়তো কালীকে একটু আদর করিয়াছে রাজকুমার এবং কি করিবে না করিবে সিদ্ধান্ত করিয়া ফেলিয়া সুখী হইয়াছে। এবার সময়মত একদিন তার কাছে কথাটা পাড়িবে। মনে মনে মনোরমা কিন্তু মাথা নাডে। রাজকুমারের খুসী হওয়া যেন সে রকম নয়। সে শান্তই ছিল চিরদিন, আরও শান্ত হইয়াছে, শুধু চােখেমুখে