পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V মানিক গ্ৰন্থাবলী বেদখলী মাল! গৌরের সঙ্গে কিছুদিন থেকে চেনা হয়েছে চিন্তামণির। গৌর কি তবে চিন্তামণির - ? ‘আদুলির ভাঙ্গ জমি পেলাম খানিক পটলবাবু।” “কিনলি নাকি ?” পটল যে বেঞ্চে বসেছিল পটলের সম্মান বজায় থাকে এতখানি তফাতে সেই বেঞ্চেই জাকিয়ে বসে গৌর বলল, “কিনতি যাব কেনে ? ভাগ পেলাম। চাদকাকা নিয়েছে জমি, আমি ভাগ পেলাম - ফসল শুদ্ধ, । কাকা দাপডাবে, কাটা ছাগলের মত দাপড়াবে ।” রহিমকে সে খাতির করে বিড়ি এগিয়ে দেয়। জিভ দিয়ে গোড়ার দাতের ফাক থেকে শাকের কণা খসিয়ে এনে উত্তেজনায় সামনের দাত দিয়ে কুটু কুটু কাটতে থাকে। রহিমের কাছ থেকে তার চাদিকাকা আদুলির ভাঙ্গ জমি কিনেছে, - তারা ভিন্ন হবার আগে । গৌর তা জানত না !! এবার মাঠে প্ৰথম লাঙ্গল দেবার সময়ে খবরটা শুনে মনটা তার গিয়েছিল। বিগডে, জমি জায়গা কিনবে বলে চাদিকাকা। তবে তাকে ভিন্ন করে দিয়েছে, তাকে ঠকিয়েছে ! তলে তলে সংসার থেকে সরিয়ে টাকা জমিয়েছে কাকা তাকে ভিন্ন করে দিয়ে নিজে একদিন এই সব করবে বলে ! পত্রিশু তাঙ্ক কাটাটা খচ খচ করছে গৌরের মনে। পরশু আদুলিতে রহিমের সঙ্গে তার দেখা । নেহাৎ বিপাকে পড়ে রহিম তার জমিটুকু বেচে দিয়েছিল, আজ সেই জমিভরা জমকালে ফসল দেখে তার মনটা আঁকুপাকু করছে, গাটা জ্বালা করছে, চোখে জল আসছে । তার হাতে কোনবার তো এমন ফসল হয়নি । বেইমান মাটি ! রহিম । বিশ রূপিয়ায় দু’আনা ফসল দিবে না ? না দিলে। খোদা আছেন । न-ळि ! গৌর। আমায় বলছ ? রহিম । সরাম নাই, আঁা ? জমিটা দিয়ে দিলাম তোমাদের আধা দামে, পয়লা বছরের দু’আনা ফসল বিশ রূপিয়ায় দিবে না! বহুত আচ্ছা। দেখে লিব। আদুলিতে চান্দকাক কার জমি কিনেছে কিছুই গৌরের জানা ছিল না। রহিমের সঙ্গে খানিক আলাপ করেই জানা গেল কাকাটা তার কত বড় ঠক্‌ ! ভিন্ন হবার আগে জমি কিনেছে তার কাকা তাকে ভাগ দেয়নি! চান্দকাকার নামে গৌর তাই নালিশ ঠিকে দিয়েছে। নিজের ভাগটা পেলেই সে রহিমকে মাগনা দু’আন ফসল দেবে। 骤