পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VO8 शानिक 6jहांदकी রাবেয়া ক’দিন থেকেই এ ভয় দেখাচ্ছে, তবু তার বিবৰ্ণ মুখ, রুক্ষ চুল আর উদভ্ৰান্ত দৃষ্টি দেখে আনোয়ারের বুক কেঁপে যায়। চাষীর ঘরের বোঁ দুর্ভিক্ষের দিনগুলি না খেয়ে ধুকতে ধুকতে কাটিয়ে দিয়েছে, কথা বলেনি, শাক পাতা কুড়িয়ে এনে খুদ কুঁডোর সাশ্রয় করে তাকে বঁচিয়ে লড়াই করেছে নিজে বাঁচবার জন্য। আজ কাপড়ের জন্য সে কামনা করছে মরণ ! খেতে দিতে না পারার দোষ ও গ্ৰাহ করেনি, পরতে দিতে না পারার দোষ ও সইতে নারাজ, দিনভর ফুসে ফুসে গঞ্জনা দিচ্ছে। বিবিকে যে পরনের কাপড় দিতে পারে না সে কেমন মরদ, তার আবার সাদি করা কেন ? অনুনয় করে আনোয়ার বলে, “আজিজ সায়েব খবর আনতে গেছেন। হাতিপুরের কাপড়ের ভাগ মিলবে আজকালের মধ্যে। একটা দিন সবুৱ কর আর।” ‘সবুৱা! আর কত সবুৱা করব ? কবরে যেয়ে সবুৱা করব। এবার।’ সেমিজ না পরলে দু’ফেরত শাড়ী পরা রাবেয়ার অভ্যাস। এক-ফেরত কাপড় জড়িয়ে মানুষের সামনে সে বার হয়নি কোন দিন। পায়খানার চটের পর্দাটা গায়ে জড়িয়ে নিজেকে তার বিবসনা মনে হচ্ছে। কাপড় যদি নেই, ঘোষ বাবুর বাড়ীর মেয়েরা এবেল ওবেলা রঙীন শাড়ী বদলে নিয়ে পরে কী করে, আজিজ সায়েবের বাড়ীর মেয়ের চুমকি বসানো হালকা শাড়ীর তলার মোটা আবরণ পায় কোথায়? সবাই পায়, পায় না। শুধু তার স্বামী । আল্লা, এ কোন भद्राद्ध श्igऊ 6न *gछिल । রাত্রের ছায়ামূর্তি হয়ে রাবেয়া গিয়ে দেখে আমিনা জ্বরে শয্যাগত হয়ে পড়ে আছে, তার গায়ে দুটাে বস্তা চাপানো, চুণের বস্তা ! বস্তার নিচেই আমিনার গায়ের চামড়া জরো যেন পুড়ে যাচ্ছে। আমিনা বলে ফিসফিসিয়ে, “গা জ্বলছে- পুড়ে যাচ্ছে! আজি ঠিক মকুব । এ বস্তা মুড়ে কবর দেবে মোকে ৷” আবদুল আজিজ আর সুরেন ঘোষ হাতিপুরের একুশ শ” চাষী ও কামার কুমার জেলে জেলা তীতি আর আড়াইশ’ ভদ্র স্ত্রীপুরুষের কাপড় যোগাবার দায়িত্ব কঁাধে নিয়েছে। মাস দেড়েক আগে উলঙ্গ হাতিপুৱা সোজাসুজি সদরে গিয়ে মহাকুমা হাকিম গোবর্ধন চাকলাদারকে লজ্জিত করেছিল। এভাবে সিধে। আক্রমণের উস্কানি যুগিয়েছিল শরৎ হালদারের মেজ ছেলে বন্ধু আর তার সতের জন সাঙ্গপােঙ্গ। সতের মাইল দূরে স্বদেশসেবক তপনবাবুর কাপড়ের কল কয়লার অভাবে অচল হয়েও সাড়ে তিনশ’ তাত কী করে। সচল আছে আর খালি গুদামো