পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আজ কাল পরশুর গল্প \9ዓዓ এবার কী করা যায়। কেউ যদি উপায় বাৎলে দিত। 'জান নয় দিলাম রে আব্বাস, আনােয়ার বলে ভুরু কুঁচকে, "কী জন্য জানটা দিব তা বল ? ভোলী বলে, 'লুঠ করে তো আনতে পারি দু'এক জোড়া, কিন্তু তারপর তারপর সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে। আকাশে ছোট চাঁদটি উঠেই আছে, দিন দিন একটু একটু বড় হবে। ক'দিন পরে জ্যোৎস্নার তেজ বাড়লে বন্দিনী ছায়াগুলির কী উপায় হবে কে জানে। চাদ ডুবলে তবে যদি বাড়ীর বাইরে যাওয়া চলে, রোজ পিছিয়ে যেতে থাকবে শেষরাত্রির দিকে চাদ ডুবিবার সময় । বিলের ধারে বঁধানো সড়কে নানারঙ শাড়ী পরা মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে বাবুৱা ক’জন হাওয়া খাচ্ছেন। কাপড় তৈরীর কলেই যে হাতিপুরের লোক কাজ করে ওই তার প্ৰমাণ। কিন্তু আরও কত লোকেও তো কাজ করে সতের মাইল দূরে কাপড় তৈরীর কলে, তবে কেন ও অবস্থা তাদের ? সবাই ভাববার চেষ্টা করে । হাতিপুরের ঘরে ঘরে খবর রটে যায়, কাপড় পাওয়া যাবে না। “তবে যে টেঢরা দিয়ে গেল কাপড় পাওয়া যাবে? সকলে প্রশ্ন করুল সন্ত্রস্ত ali i রসুল মিয়ার দালানের সামনের রোয়াকে এক ঘণ্টা। ধন্ন দিয়ে পড়ে থেকে আনোয়ার বাড়ী গেল সন্ধ্যার পরে। শাড়ী না পাক, কথা সে আদায় করেছে। বাড়তি শাড়ী ঘরে ছিল। কিন্তু রসুল মিয়াও একটু ভয় পেয়ে গেছেন। অবস্থাটা একটু ভাল করে বুঝতে চান আগে। কদিন পরে তিনি একখানা শাড়ী অন্ততঃ আনোয়ারকে দেবেন, আজ হবে না। তাই হােক, তাও মন্দের ভাল। রসুল মিয়ার কথার খেলাপ হবে না। আশা করা যায়। রাবেয়াকে এই কথাটা অন্ততঃ বলা যাবে। রাবেয়া খানিক পরে ঘাট থেকে ফিরে আসে। অদ্ভুত রকম শান্ত মনে হয় আজ তাকে । আনোয়ার গোড়ায় তাকে দুঃসংবাদটা দেয়। রাবেয়া বলে, ‘জানি।” তারপর আনোয়ার রসুল মিয়ার কাছে দু’চারদিনের মধ্যে শাড়ী পাবার ভরসার খবরটা জানায়। এবারও রাবেয়া বলে, “জানি ।” দাওয়ায় এসে রাবেয়া তার কাছেই বসে। তেল নেই, দীপহীন অন্ধকার বাড়ী । অন্ধকার বলেই বুঝি পায়খানার ছেড়া চটের পর্দা জড়িয়ে নিজের কাছে রাবেয়া লজা কম পায়। তাই বোধ হয়। সে শান্ত হয়ে বসে কথা বলে আনোয়ারের সঙ্গে,