পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VA আজ কাল পরশুর গল্প Voy পাছী টন টন করে ওঠে মঙ্গলার। পাছায় সে বেত খেয়েছিল দু’মাস আগে, সে ব্যথা আজও থাকার কথা নয়। তবে উলঙ্গ করে বেত মারা হয়েছিল বলে বোধ হয়। ঘটনার সঙ্গে শারীরিক বেদনাটাও তাজা কটকটে হয়ে আছে স্মৃতিতে । কানাই-এর ছোট ভাই বলাই ডোবায় না গিয়ে উঠেছিল বাড়ীর দক্ষিণে তেঁতুল গাছটায়। ওদের মতো জলকাদায় ভিজে শীতে কষ্ট না পেলেও সমস্ত শরীরটা তার ব্যথায় টনটন করছে। কলকেটা নিয়ে দাদার দিকে পিছন ফিরে বসে টান দিয়ে সে বলে, “মোদের আর কিছু করবে না মন করি। ফেরার ক'জনার জন্যে তো হানা দিচ্ছে, মোদের মারধোর আর না করতে পারে।” ‘বলেছে তোমার কানে কানে, পীরিতের সাঙ্গাৎ তুমি।” মঙ্গল গর্জে ওঠে। সেই সঙ্গে তারস্বরে উদ্ধার করতে আরম্ভ করে জগতে যেখানে যত পুলিশ আছে তাদের চোঁদপুরুষকে। বাড়ীর সামনে পথ দিয়ে যেতে যেতে কথাগুলি শুনতে পায় অধর ঘোষাল । হনহানিয়ে বাড়ীর মধ্যে এসে মুখে হাত চাপা দেওয়ার মতো ব্যস্ত বিহবল মানায় তাকে থামিয়ে দেয় । “থাম ছুড়ি, থাম। কে গিয়ে খবর দেবেঁ, মরবি যে তখন ?” “ঠিক । সবার হাড়ির খবর যাচ্ছে, অবাক কাণ্ড ।” “ভূষণ শালা একজন, ওবাড়ীর ভূষণ মাইতি।” আধর ব্যাকুলভাবে ধমকে বলে, “থাক না বাবা, থাক না । অত দিয়ে কাজ কি তোদের, চুপ মেরে থাক না ?” “চুপ মেরেই তো আছি গো বাৰু। বােবা বনে গেলাম।” বলে মঙ্গলা এতক্ষণে পিাড়ি এনে অধর ঘোষালকে বসতে দেয় । 'না, আর বসব না।” বলে অধর ঘোষাল উবু হয়ে বেশ জাকিয়ে বসে। অধর রোগ, ঢ্যাঙ্গা, চিকণ খ্যামবর্ণ। চুলে সবে পাক ধরেছে কিন্তু ভুরু একেবারে সাদা। শীর্ণতা, লম্বা গলাবন্ধ কোটি আর পাকা ভুরুর জন্যে তাকে ভারি হিসেবী, বিষয়ী ও বিবেচক মনে হয়। “বলতে তো ভরসা হয় না তোদের, পেটে কথা রাখতে পারিস নে। বলে (दएछवि थछनक ।' A. কিছু বলতে চায় বুড়ো। পেটে কথা চেপে রাখতে পারছে না। তাই এমন মুখের ভঙ্গি করেছে যেন তাদের অবিশ্বাস করেও অনুগ্রহ করার জন্যইচ্ছার বিরুদ্ধে বিশ্বাস করছে। অধরের কথা আর ভঙ্গিতে গা জলে যায় মঙ্গলার।