পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

9 or , 兽拳 মানিক গ্ৰন্থাবলী ‘স্বদেব আর ভূদেব কাল রাতে এয়েছিল। মরমর মাটিকে দেখতে।” ‘বটে’ ?” কানাই আর বলাই-এর মুখ ই হয়ে যায়। ‘সাহস কী, মাগো ! গাঁয়ে এল ?” মঙ্গলা বলে। ‘খবর পেয়ে পুলিশ এসেছিল।’ ] ‘ধরেছে নাকি ?’ রুদ্ধশ্বাসে প্রশ্ন করে তিনজনে । অধৱ মাথা নাড়ে । - “না পালিয়ে গেল। কী করে পালাল ভগবান জানে, চাদিকে ঘিরে ফেলেছিল।” অধরের চােখ প্ৰায় বুজে আসে, মৃদু ক্ষোভ আর আপসোসের সুরে বলে,*পুলিশ এবার বলবে, গায়ের লোক ওদের লুকিয়ে রাখছে, সাহায্য করছে। ফের তল্লাসী চলবে নতুন করে, জিজ্ঞাসাবাদ সুরু হবে, চযে ফেলবে গীটাকে। দ্যাখ দিকি বাপু, তোদের ক'জনার জন্যে গা শুদ্ধ, লোকের কি দুর্ভোেগ ? নিজের মা বোন বাপ ভায়ের কথাটাও ভাববিনে তোরা ?” মঙ্গল থিতামত খেয়ে যায়। কথাটা তো ঠিক বলেছে হাডহাবাতে বজাত বুড়ো! কজ্জাত ? আজ প্ৰথম মঙ্গলার খেয়াল হয় পদায্যের প্রায় সব লোক কতকাল অধরকে মনে মনে বজাত বলে জেনে রেখেছে তার হিসেব হয় না, অথচ ওর কোন বজাতির খববু তো তারা রাখে না ! সে নিজেও মনে মনে লোকটাকে কত খারাপ বলে জেনে এসেছে চিরকাল, অথচ চিরদিন সাধু, ভদ্র, পরোপকারী বিবেচক মানুষ যেন সে, এমনি ব্যবহারই করে এসেছে তার সঙ্গে ৷৷ ও কেন খারাপ, কোন বিষয়ে অসাধু, অভদ্র, অনিষ্টকারী বা অবিবেচক তাতো সে কিছুই • • ! কিছুদিন থেকে একটু বেশী যাতায়াত আর ঘনিষ্ঠতার চেষ্টা করায় মনে হয়েছিল, বুড়ো বুঝি, মরেছে। বয়স কঁচা না থাক, যৌবন যা আছে তাতেই বুড়োকে সাত ঘাটের জল খাইয়ে ছাড়তে পারবে ভেবেছিল সে। কিন্তু এক ঘাটের জল খেতে চাওয়ার সাধও তো শেষ পৰ্যন্ত বুড়োর দেখা যায় নি! A. “কতকাল পালিয়ে বেড়াতে পারবি বল ? খানিক থেমে থেকে, একটু প্ৰায় ঝিমিয়ে নিয়ে, অধর বলে, ‘ধরা পড়বি, দু’দিন আগে আর পরে। নিজেরাই ধরা দে, হাঙ্গামা চুকুক, আমরা বাচি । গায়ে বা আসবার কী দরকার ছিল তোদের দু’জনের ? পালিয়েছিস, দূরে পালা, পুলিশ জানুক গায়ের ধারে কাছে তোরা নেই। মাকে দেখতে এয়েছে! কত দরদ মায়ের জন্যে ! বুড়ো বাপ খেতুনি খাচ্ছে, মায়ের চিকিচ্ছে নেই, ধরা না দিয়ে দরদ করে দেখতে এলেন মাকে। খুব তো দেখিলি, গা শুদ্ধ, লোককে হাঙ্গামায় ফেলে গেলি ফের !”