পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(3) মানিক গ্ৰন্থাবলী মৰুৰ বলে, “কিয় কি, তোরা পোলাপান, তোদের কথায় গিয়ে মরব ? ‘পোলাপান ঠাউরেছে, না ? - একটা কুৎসিত ইঙ্গিতে তারা যে পাকাপোক্ত পুরুষের চেয়ে বেশী কিছু সেটা প্ৰমাণ করে তিনজনে হাসে। মানুষ বুড়ো হয়ে মরে গিয়ে যত বুড়ো হয় গজেন তার চেয়ে পাকা । হাসাহাসির পর সে বলে, “তা কথা বেঠিক না। মাগী ছাড়া মাগীরা ভরসা পায় না। চপলার জন্যে এ মুশকিল।” চপলার খারাপ রোগ হয়েছে, সর্বাঙ্গে ক্ষত। দামী কাপড় পরে হাসিমুখে সে আর গায়ে গায়ে ঘুরে কটিবাজারে কাজ করতে যাবার জন্য মেয়েদের ভরসা দিতে 9ts কথাটা ভাববার মতো । ভাবতে ভাবতে গজেন বাউী যায়। বাড়ী পৌছেই ভাত বাড়বার হুকুম দেয়, এখুনি তাকে কটিবাজার রওনা হতে হবে। রোজগেরে ছেলেকে বাডীর মেয়েরাই সাগ্রহে ভাত বেড়ে দিত। কিন্তু তারা কেউ নড়বার চড়বার আগেই ওবাড়ীর হাবো যেন উড়তে উড়তে পিড়ী পেতে তার ভাত বেড়ে এনে দেয়! গজেনের নতুন মা, মাসী আর পিসীরা অসন্তুষ্ট হয়ে আড়চােখে তাকায় । ছুড়ি যে গজেনেরি দেওয়া নতুন রঙীন শাড়ি পরে এ বাড়িতে এসে ফর ফর করে উড়ছে, এতে তাদের চোখ জ্বালা করে আরও বেশী । ‘ফিরবে। কবে ? সভয় ভক্তিতে হাবো জিজ্ঞেস করে । গলা তার প্রায় বুজে অ্যাসে আবেগে । ‘পরশু তরুণ্ড ফিরব ।” হাবোকে মন্দ দেখাচ্ছে না রঙীন কাপড়ে, গজেন ভাবে। একটু আশ্চর্য হয়েই সে মেয়েটার সারা গায়ে একবার ভাল করে চোখ বুলিয়ে নেয় — মেয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে সে এদিক ওদিক আর তার একান্ত অনুগত এই যে একটা মেয়ে আছে, এর কথা তার খেয়ালও হয় নি একবার । একটু চাবাগোবা মেয়েটা, চোখ একটু ট্যারা, হাড়গিলের মতো রোগা শরীর । কিন্তু বয়েস তো কম । তাছাড়া, এরকম হাবা গোছের মেয়েই ভাল, সহজে বাগানো যায়, ভয় দেখিয়ে সহজে কাবু করা চলে । “হাবো, সঙ্গে যাবি ? কাজ করে খাবি ? কাপড় গয়না পাবি ? ‘शांद !' হাবোর চোখ জলজল করে ওঠে । চিরদিন এই মেয়েটা কেন যে তার এত অনুগত গজেন জানে না - পৃথিবীতে এই একজন ! কোনদিন ভাবেও না । হাবো তার কাছে অতি সস্তা, তাকে অন্ধ