পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বার্থপর ও ভীরুর লড়াই কৈলাস বসুকে সকলে স্বার্থপর আর সঙ্কীর্ণচতা বলে জানে। মানুষটার চালচলন আচার ব্যবহার তো বটেই, চেহারাও সকলের এই ধারণাকে অনেকটা সমর্থন করে। বেঁটে, আঁটােসোটো ধরণের মোটা, প্ৰায় গোলাকার মাথায় বুরুষের মতো শক্ত ছোট ছোট করে ছাটা চুল, লম্বা নাকের দু’পাশে মোটা ক্রর নীচে খুদে খুদে দু’টি চােখ। চােখ দু'টিকে কটাই বলা চলে। ছোট এবং কটা, তবু সে চোখের দৃষ্টি বড় বড় নিকষ কালো চোখের অধিকারীদের কাছে বড় বেশী স্পষ্ট সমালোচনা আর তিরস্কারে ভরা মনে হয়। মুখের আটক নেই, এমন অভদ্র মানুষকে এড়ানোর মতো সকলের চোখ তাই কৈলাস বসুর চোখকে এড়িয়ে চলে । কৈলাস কথা যে কম বলে তা নয়, মৃদু রসিকতাভৱা হাসির সঙ্গে মিষ্টি কথাই সাধারণত বলে, তবু লোকের মনে হয় সে যেন বড় বেশী গভীর, সব সময় মুখ বুজে কেবল নিজের কথা ভাবছে। কারণটা সম্ভবত এই যে, অন্যের বক্তব্যের সঙ্গে প্রায়ই তার কথার কোন যোগ থাকে না। অবিনাশ চক্রবর্তীর সঙ্গে হয়তো তার দেখা হয়ে গেল, তাকে চমকিয়ে দেবার জন্য অবিনাশ হয়তো সাগ্রহে জিজ্ঞেস করল, “ঘোষালের কীবৃতিটা শুনেছেন, দাদা-ওপাড়ার কেদার ঘোষালের নতুন কীৰ্ব্বতি ? ছি, ছি! ভদৱলোকের এমন পিরবিত্তি হয়, এমন কাজ ভদৱলোকে করে । -- * কৈলাস হয়তো জিজ্ঞেস করে, "ছেলের কোন খপর পেলেন চক্কোত্তি মশায় ? চিঠিপত্র এল ?’ অবিনাশ একটু দমে যায়। সহরবাসী রোজগেরে ছেলে তাকে ত্যাগ করেছে সত্য, চিঠিও লেখে না খবরও পাঠায় না, কিন্তু এই কি সে কথা তুলিবার সময় ! সহানুভূতি জানানোর তো সময় আছে ? তৰু ধৈৰ্য ধরে অবিনাশ হয়তো বলে,