পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আজ কাল পরশুর গল্প { 8R পথটাতেই যখন কাজ চলে, সে কেন অন্য যায়গায় রান্নাঘর তুলে অসুবিধা ভোগ করবে ? কেদার ঘোষাল সকলকে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু কেউ সাহস করেনি। অন্য লোকে হয়তো মামলার নামেই একটা মিটমাটের জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠত, তার জমির উপর দিয়ে পাড়ার লোকের হাটবার অধিকারের বদলে কমপক্ষে পাড়ার লোককে মন্ত একটা ভোজ দিয়ে দিত। কিন্তু কৈলাস হয়তো মামলার নামেই ড্রাগে কলকাতা থেকে উকিল ব্যারিষ্টার আনাবার ব্যবস্থা করে রাখবে। কৈলাসের স্ত্রী অভয়ার একটু ঝগড়া করা সখ। কিন্তু সাতটি ছেলেমেয়ে আর স্বার্থপর স্বামীর জন্য বেচারীর সখটা ভাল করে মিটতে না মিটতে প্ৰায় চাপাই পড়ে গিয়েছে। মাঝে মাঝে সে অনুযোগ করে বলে, “মানষের সঙ্গে একটু মানিয়ে চলতে পার না ? কৈলাস আশ্চর্য ও আহত হওয়ার ভাণ করে বলে, “কেন, তোমার সঙ্গে মানিয়ে চলি না ? “মানিয়ে যা চল তা ভগবানই জানেন । আমার কপাল মন্দ তাই তোমার হাতে পড়েছিলাম। লোকের নামে কুৎসা রটিয়ে বেডা ও কেন তুমি ? তোমার কি দরকার নিন্দে করে ? সকলকে চটিয়ে লাভ কি শুনি ? কৈলাস জবাব দেয় না । এও তার এক ধরণের স্বার্থপরতা, নিজেকে সমর্থন করার জন্যও নিজের স্ত্রীর সঙ্গে তর্ক করতে চায় না । অভয়ার অনুযোগটাও মিথ্যা নয়। কারও কুৎসা কৈলাস কাণে তুলতে চায় না, উৎসাহী প্রচারককে বাজে কথা বলে দমিয়ে দেয়, তবু ষে কী করে কুৎসা-প্রচারক হিসাবে তারই নামে কুৎসা ব্লটে যায় । তার কথায় লোকে বিশ্বাস করে বলে হয়তো প্রচারকামীরা ইচ্ছা করে তার নামটা ব্যবহার করে। হয়তো ব্যক্তিগত ভাবে মানুষকে সে এমনভাবে নিজের নিজের অন্যায়গুলি উপলব্ধি করায়, যে অন্যের অপবাদ কাণে এলে সকলের মনে হয়, সে ছাড়া আর কে চোখে আঙ্গুল দিয়ে পরের অপবাদ দেখিয়ে দেবে ? কেদার ঘোষালের আধুনিকতম কলঙ্কের সঙ্গে তার নামটা বড়বেশী ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে গিয়েছে। অবিনাশ চক্রবর্তী রাধারমণ ভট্টাচাৰ্যকে বলেছিল, "কৈলাস বোসের অহঙ্কার আর তো সয় না। দাদা । নিজের চোখে যা না দেখবে তাই হেসে উড়িয়ে দেবে, সবাই যেন মিথ্যেবাদী। কেদার ঘোষালের ব্যাপারটা বললাম, শুনে আমার সঙ্গে তামাস জুড়ে দিল। আমি যেন ওর তামাসার পাততর।’ আরও অনেক কথা অবিনাশ বলেছিল । পরদিন। রটে গিয়েছিল, কৈলাস স্বীকার