পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

388 शांत्रिक Giहॉवर्टी রোমাঞ্চকর কাহিনী শোনা যায়, কিন্তু কবে যে সে ঘটনাগুলি ঘটেছিল। কেউ বলতে পারে না, একেবারে ঘটেছিল। কিনা তারও কোন প্ৰমাণ নেই। এ পথের আশে-পাশের বস্তি-গাগুলিতে যাদের বাস, চুরি ডাকাতি তারা যদি করে, ধারে কাছে কখনো করে না। এ পথের একলা পথিকের গায়ে হাত দেয়া দূরে থাক, তাকে ভয় দেখাবার ভরসা পর্যন্ত ওদের নেই। ওরকম কিছু ঘটলে দায়ী হবে ওরাই। পুলিশও প্ৰমাণ খুজিবে না, জমিদার কাতিক চক্রবর্তীও নয়- দু'পক্ষের শাসনে থেতো হয়ে যাবে ওরা পুড়ে ছাই হয়ে যাবে তাদের কুঁড়েগুলি, বাতিল হয়ে যাবে আশে-পাশে বাস করার অনুমতি । একবার সদরে টাকা নিয়ে যাচ্ছিল গোমস্তা রাধাচরণ, সঙ্গে ছিল দু’জন পাইক । জন সাতেক লোক তাদের মারধোর করে টাকা কেড়ে নিয়ে যায়। পরে তারা ধরা পড়ে জেলে গিয়েছিল, ফুলবাড়ীর পাঁচজন আর মালদিয়ার দু’জন - পরে। দু’দিকের চাপে রাঘবের আর কাছাকাছি আরও তিনচারটে বস্তি গায়ের মানুষেরা থেতো হয়ে যাবার পরে । পথ থেকে হাক এলে এরা সাড়া দেয় । ভীরু লোক দাবী করলে সঙ্গে পৌছেও দিয়ে আসে এদিকে ফুলবাড়ী বা ওদিকে সড়কের মোড় পৰ্যন্ত | একলা ভীরু পথিকের ভালোমন্দের দায়িক ওরাই কিনা । শেষ বেলায় ফুলবাড়ী — মালদিয়া নামমাত্র পথ ধরে বোেচকা মাথায় দু’জন লোক চলেছে মালদিয়ার দিকে। বেশভূষা বেঁচেকার আকার, বয়স, আর গায়ের রঙ ছাড়া দু’জনের মধ্যে পার্থক্য বেশী নেই - অর্থাৎ, লম্বায় চওড়ায় দু'জনেই প্ৰায় সমান হবে । গায়ের জোরে কিনা বলা অসম্ভব, জোরের পরীক্ষা কখনো হয় নি । রাঘব মালাকরের কোমরে একহাত একটি গামছা জড়ানো, জ্যালিজেলে পুৱনে। গামছা । গৌতম দাসের পরনে প্রমাণসাইজ ঘরে-কাচা আধপুরনো- মিলের ধুতি, গায়ে পুরনো ছিটের সার্ট, ঘাড়ের কাছে একটু ছিড়েছে। পায়ে ক্যাম্বিসের জুতো। রাঘবের বোঁচকাটা বেশ বড়, গৌতমের বেঁচেকা তার সিকির চেয়ে ছোট হবে। রাঘবের আছােটা চুলে পাক ধরেছে, গৌতমের ছাটা চুলেও তাই, তবে রাঘব পনের বিশ বছরের বড় হবে গৌতমের চেয়ে। রাঘব মিশকালো, গৌতম মেটে । খান দশেক কুঁড়ের নামহীন গায়ের কাছে এসে একটু হাঁপ ধরে রাঘবের । গতবারের চেয়ে এবারের বোঝাটা বেশী ভারি। দু’চার মিনিটের জন্য একটু সে নামিয়ে রাখে। 冤 গৌতম বলে, ‘আবার নামালি ? আজি তোর হয়েছে কি র্যা ?