পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8tr মানিক গ্রন্থাবলী পড়িবার উপক্রম হইয়াছে খেয়াল করায় নূতন এক ভয় তার এই কদিনের ভয়কে দুর্বল করিয়া গিয়াছে। জগদীশ ডাকিতে আসিলে সে তাকে ফিরাইয়া দিল । পড়িতে পড়িতে ছেলেমেয়ের আবিরত ঝগড়া আর মারামারি করিতেছে। ওদের স্বাভাবিক দুরন্তপনার মধ্যেও যেন কেমন খাপছাড়া বেপরোয় হিংস্রভাব দেখা দিয়াছে। মেজাজ যেন ওদেরও তিরিক্ষে হইয়া উঠিয়াছে। তার পর এক সময় ছেলেমেয়েরা ভাত খাইতে গেল, উমার গালাগালি আর মারা খাইয়া পলটুর আর্ত ও মিনুর নাকি সুরে কান্না ধনেশের কানে আসিতে লাগিল। চুপ করিয়া সে ঘরে বসিয়া বুহিল। অবসাদ ধীরে ধীরে কেমন একটা মৃদু ও শাস্ত নেশায় পরিবতিত হইয়া যাইতেছে, দুর্বল জরো রোগীর আলস্যের মত। ঘরের বাহিরে বারন্দায় হঠাৎ পারুল আর লাবণ্যর মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হইয়াছে। সেই পারুল আর সেই লাবণ্য । সখির মত গলায় গলায় ভাব ছিল এই দু’টি ভাসুরবি আর কাকীমার। কাড়াকডি করিয়া লাবণ্য সংসারের কাজ করিত, উমার ছেলেমেয়ে মার চেয়ে কাকীমার আদর পাইত বেশি। সংসারের কাজ করা লইয়া পারুলের সঙ্গে আজ সে ঝগড়া করিতেছে । একতলা হইতে উমা চীৎকার কারিয়া একটা বিশ্ৰী কথা বলিল লাবণ্যকে । লাবণ্য বাবালো গলায় জবাব দিল, “তোমার খাই না পরি যে য মুখে আসছে বলছ দিদি ? লাবণ্য এত জোরে কথা বলিতে পারে ? এত কর্কশ তার গলা ? অনেকক্ষণ পরে কি কাজে ঘরে আসিয়া ধনেশকে বসিয়া থাকিতে দেখিয়া উমার মুখ ফ্যাকাশে হইয়া গেল। উমা ভাবিয়াছিল, সে বুঝি পাড়ার দশজনের সঙ্গে কথা বলিতে বাহির হইয়াছে। বাড়িতে তার তো চুপচাপ একা বসিয়া থাকা স্বাভাবি নয়, বাড়ি থাকিলে এতক্ষণ কত আলোচনা, কত পরামর্শ তার চলিতে क्षकि ! “কি হয়েছে গো ? আজি কিছু হবে নাকি ?’ ভয়ে উমার কথাগুলি প্ৰায় अgाईग्रों coॉन । ‘শরীরটা ভাল নেই। পুলক ফেরেনি ?” “না। ঘরে বসে আছ, খেয়ে তো নিতে পারতে এতক্ষণ ? সারারাত হেঁসেল আগলে বসে থাকব ? সকালে চার বস্তা চাল, এক বস্তা ডাল এবং চান, তেল, মসলা মুদি দোকান হইতে আনা হইয়াছিল। বাজারে গিয়াছিল মাছ তারকারী কিনিতে, রসিকবাবু