পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

रुिलाबनेि বড়মামা অদ্বৈতের বয়স ষাট হবে। চুল টুল পেকে সে বুড়ো হয়নি। কিন্তু বৈষ্ণব হয়েছে । তার অসাধারণ কৃষ্ণ ভক্তির কথা দাতপুৱা আর আশে পাশের গায়ে ছড়িয়ে গেছে। কত লোক স্বচক্ষে দেখেছে কৃষ্ণলীলার যাত্রার গান ভেঙ্গে চুরে গাইতে গাইতে দু'চোখে তার জলের ধারা বয়ে যাচ্ছে। এত লোকের মধ্যে সেই প্ৰথম উদাসীন আপনাভোলা সুরে গৌরের আসবার কারণ জিজ্ঞেস করল । “বাছুর ? বাকনাটা ? তোকে দিব কথা ছিল না কি বটে ? “ছিল না ? মা’কে নাহক বিশবার বলেছ। দুধ ছাডলে পাঠিয়ে দেবে, মাস দুয়েকের মধ্যে নয়তো খবর দেবে, আমি এসে লিয়ে যাব । ও বাছুর আমার মামা, দিতে হবে, চালাকি নয়, হঁহা ।” অদ্বৈত চোখ বুজে। গদগদ হয়ে বলল, “অ’ গৌরী, তোর ভাগ্যি ভাল, বড় ভাল তোরা ভাগ্যি ।” গৌর সন্দিগ্ধ হয়ে জিজ্ঞেস করল, “কিসে ? “বাছুরটি প্ৰভু গৰ্বহণ করেছেন।” অদ্বৈতের গুরুঠাকুর এসেছিলেন মাঝখানে, যাবার সময় পাটল রঙের বাছুরটির গলার দডি স্বয়ং শ্ৰীহস্তে ধারণ করে নিয়ে গেছেন। বাছুরটি আগেই যখন গৌরকে দেওয়া হয়েছিল, পুণ্যটা তারই হয়েছে সন্দেহ কি ! ‘জানিস গৌরী, আ বাবা জানিস ? বলি শোন তোকে । শোনা কি অবাক কাণ্ড । যাবার আগে বলা নেই কওয়া নেই প্ৰভু তোর কথা শুধোলেন। তখন টের পাইনি, আজ জানিছি, তেনা জানতেন । কিরাপ করলেন তোকে । ভক্তির লেশটুকুতো মনে তোর নাই। কিনা তাই তোর বাছুরটি গরুহণ করে তোকে কিরুপ করলেন ।” গৌরাঙ্গ থ” বনে থাকে, আপশোসে আর বিস্ময়ে। কুনুর মোটা মোটা মেয়ে লক্ষ্মীর বিয়ে শুনে মনটা তার মস্ত একটা ক্ষতি বোধের চাবুক খেয়ে ছ্যাৎ করে উঠেছিল, তারপর ধীরে ধীরে বাড়ছিল ন্যায্য পাওনা ফসকে যাওয়ার ক্ষোভ । এ আরেকটা ক্ষতি, পাওনায় ফাকি পড়ায় কিন্তু ভাল করে ক্ষুব্ধ সে হতে পারল না। তার বাছুরটি একজন বাগিয়ে নিয়েছে ভেবে সে রেগে উঠতে যায়, কিন্তু সেই একজনটি এমন আশ্চর্য ক্ষমতার অধিকারী যে মামারা তাকে বাছুরটি দিয়েছে একথা না জেনেও জানতে পারেন বলে রাগ আর তার করা হয় না । गांनिक-(७)-8