পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৫৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিস্থিতি VD ছাগল বেচলে বাঁচতো ? মানোর মার ধাধায় কাবু হয়ে পড়ে ভৈরব, ছাগল কোথা ছিল তখন ? কালী তো জন্মালে দু’চার দিন আগে, মানো যাওয়ার দু’চার দিন আগে ওই গোয়াল-ঘরটায় । ওর মা-টাকে বেচা যেত না ? বাচ্চা কটাকে ? কার ছাগল কি বিত্তান্ত কিছু জানি না, বেচে দেব? আর সবে বিইয়েছে দুটাে তিনটে দিন আগে ? রওনা দেও না ? এসে না গিয়ে ভালয় ভালয় ? মানোর মা বলে। লড়ায়ে জেতা। রানীর মত, বেলা যে দুপুর হয়ে যাবে সদরে পৌছতে ছাগল খেদিয়ে নিয়ে ? গলায় কাপড়ের পাড় বেঁধে কালীকে টানতে টানতে ভৈরব রওনা দেয় সদরের উদ্দেশে শেষ রাত্রির অন্তগামী চাদের স্নান জ্যোৎস্নায় । দু’প গিয়েছে কি না। গিয়েছে মানোর মা ছুটে এসে বঁাশের কঞ্চিটা হাতে তুলে দেয়। উপদেশ দেয় যে টানতে টানতে ছাগল নিয়ে যাওয়া চলে তিন কোশ পথ ? কালীকে সামনে দিয়ে পেছন থেকে কঞ্চির বাডি মেরে মেরে নিয়ে গেলে যদি ভরসা থাকে আজ সদরে পৌছবার। উপদেশটা কাজে লাগে ভৈরবের, বৌয়ের উপদেশ । সে যেন জানে না ছাগল তাড়িয়ে নিয়ে যাবার কায়দা, জন্ম-ভোর ক্ষেত চষে আর গরু-ছাগল তাড়িয়ে নিয়ে চুলে তার পাক ধরেছে। তবে কি না কালীকে বার বার কঞ্চির বাড়ি মারতে হয়। এই যা দুঃখ । পাড়ের দড়ি বেশ লম্বা ও শক্ত। বাঁধন খুলে পালাবার চেষ্টা করে করে কালী শেষে হার মানে। যুদ্ধের আগের সন্তা শাড়ির পাড়, চওড়া যেমন শক্ত তেমন। ঘরে কাপড় নেই। ভৈরবের । এই কটা পাড় আজও টিকে আছে, গরু-বাঁধা দড়ির কাজ পৰ্যন্ত বুঝি ভাল চলত আজকালকার দড়ির চেয়ে এই পাড় দিয়ে, যদি 外卒访]屯阿9T夺丐1 কোথা থেকে কার একটা ছাগল এসে তার ভাঙ্গা গোয়ালের ফাকা চালাটার নিচে পাচটা বাচ্চ বিইয়েছিল । মানোর শোকে কাতর, না খেয়ে না খেয়ে আধমরা মানোর মা শুকনো পাতা জেলে মাঘের বাঘ-মারা শীত থেকে বঁচিয়েছিল ছাগল আর তার বাচ্চা ক’টাকে নয়তো ছাগলটা বঁচিলেও ক’টা বাচ্চ টিকত কে জানে ! কয়েক দিন পরে জাফর এসেছিল তার ছাগল আর বাচ্চ নিয়ে যেতে। একটা বাচ্চ পুরস্কার দিয়ে গিয়েছিল। দুধ না খেয়ে বঁাচবে তো ? জাফর শুধিয়েছিল। বঁাচাবো । বলেছিল। ভৈরব উদাসীন ভাবে । মনে মনে সে ভাবছিল, বঁাচে তো বঁাচবে, না বঁাচে তো কচি