পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৫৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিস্থিতি (:\9ዓ করো না। ওটা নিছক তামাসা। তামাসা বােঝা না, কেমন চাষী তুমি ? যাই হোক, যত হােক, তুমি লোক ভাল, তা কি জানি না। আমি ? তবে কথা কি জানো, ছাগল নিয়ে যাচ্ছে কোথায় ? ? সদরে বেচে দেবী ছাগলটা। ফসল তোলা-তক ক’টাদিন আর চলে না, কোনো V 臀 সদরে গিয়ে ছাগল বেচবে ? কৈলাস বলে আশ্চর্য হয়ে, তোমার তো আম্পদ কম নয় ভৈরব ! গায়ের গরু-ছাগল সব কিনে নিচ্ছি। আমি যে যা বেচিতে চায়, আমার লোক চাদিকে রয়েছে, বেচতে যাতে কারো অসুবিধা না হয়, তুমি সদরে চলেছ একটা ছাগল বেচিতে ? আমাকে ছাড়িয়ে উঠতে চাও দেখছি তুমি! পুবের আকাশে সুৰ্য তখন কয়েক হাত উঠেছে। কালাপুর ছাড়বার পথ এটা, একটু আগেই পুল। খালের চেয়েও মর্যা-মজা ছোট-খাটো নদীটা লোকে অনায়াসে হেঁটেই পার হয়ে যেত, পুল তৈরী করে দেবার কণ্টাক্ট নিয়ে কৈলাস গুছিয়ে নিয়েছিল। ভোরের রোদে ঝলমলে বাকাটে পুলটার দিকে চেয়ে ভৈরব ভয়ডর ड्रश्न शांव्र । আপনাকে গরু-ছাগল দেওয়া মানে তো খয়রাৎ করা । বটে না কি ? সবাই তাই আমাকে গছিয়ে দিতে পাগল ! নাক ঝেড়ে কৈলাস বলে, শোন বলি তোকে ছ’টাকা সবাই পায়, তোকে আট দিচ্ছি। আর কাউকে বলিস না । এমনি ছাগলের জন্য আট টাকা করে দিতে হলে ব্যবসা গুটোতে হবে। গাঁয়ে গিয়ে লতিফাকে এ চিঠিটা দিবি যা - পেন্সিলে লিখে দিলাম তো কি হয়েছে, ওতেই হবে । ছাগলটা জমা দিলে লতিফ তোকে আটটা টাকা দেবে। রও, রিও । ভৈরব সাতঙ্কে বলে, আট টাকা কিসের ? সদরে এ ছাগল আঠারো টাকায় বেচবো । কৈলাসের মুখ গভীর হয়ে যায়। - বাড়াবাড়ি করিস নে ভৈরব। ছাগল নিয়ে সদরে যাবার তোর রাইট নেই। তা জানিস ব্যাটা ? কি জন্তে ? আমার ছাগল আমি যেথা খুশি নিয়ে যাব। মাইয়ি ? কৈলাস খোঁকিয়ে ওঠে বাঘা কুকুরের মত, আমি দশ-বিশ হাজার ঢেলে লাইসেন্স নেবো সরকারের কাছ থেকে, আর তোমরা যার যেথা খুশি নিয়ে গরু-ছাগল বেচাবে ? সরকার আইন করে দিয়েছে, চাল কাপড়, কেরোসিনের মত গরু-ছাগল কেউ গায়ের বাইরে নিতে পারবে না। অত টাকা ঢেলে কে নেৰে লাইসেল ?