(RR भांत्रिक (यहांदकी তার বুকের মধ্যে। ট্যাকে গোঁজা দাদনের টাকা দুটাে যেন ছ্যাক দিতে থাকে চামড়ায়। কিন্তু এদিকে তাত না চালিয়ে চালিয়ে সর্বাঙ্গে আড়ষ্টমত ব্যাথা, পেটে খিদেটা মরে মরে জাগছে বারবার, বৌটা গোঙ্গাচ্ছে একটানা । al কি করবে মদন আঁতি ? সেদিন রাত্রি যখন গভীর হয়ে এসেছে, শীতের চাঁদের মান আলোয় গা ঘুমিয়ে পড়েছে, চারিদিক স্তব্ধ নিঝুম হয়ে আছে মাঝে মাঝে কাছে ও দূরে কুকুরশিয়ালের ডাক ছাড়া, মদন তাতির তীত ঘরে শব্দ শুরু হল ঠকাঠক, ঠকাঠক। খুব জোরে তাত চালিয়েছে। মদন, শব্দ উঠছে জোরে । উদির ঘরে তো বটেই, বৃন্দাবনের ঘরে শব্দ পৌছতে থাকে তার তােত চালানোর। ভুবন বলে আশ্চর্ষ হয়ে, এর মধ্যে র্তত চাপাল ? এক মানুষ কখন ঠিক করল। সব ? উদিও অবাক হয়ে গিয়েছিল— ও খাটি গুণী লোক ও সব পারে - সে বলে ভয়ে ও বিস্ময়ে কান পেতে থেকে। বুড়ো বৃন্দাবন ছেলেকে ডেকে বলে, মদন তঁাত চালায় নাকি রে ? তা ছাড়া কি আর ? কেশব জবাব দেয় ঝাঝের সঙ্গে, রাতদুকুরে চুপে চুপে তাত চালাচ্ছেন, ঘাট শুধু মোদের বেলা । ভুবনের সুতো না হতে পারে। কার মতো। তবে ? কার আছে সুতো ভুবন ছাড়া শুনি ? মদনের তাত কখন থেমেছিল উদ্দি জানে না। ভোরে ঘুম ভেঙ্গেই সে ছুটে যায় মদনের কাছে। মদনকে ডেকে তুলে সাগ্রহে বলে, কতটা বুনলে তঁাতি ? আয় দেখবি। মদন তাকে নিয়ে যায় তাত ঘরে । ফাক শূন্য তঁাত দেখে থ বনে থাকে উদি। সুতোর বাণ্ডিল যেমন ছিল তেমনি পড়ে আছে। সুতো মদন উদির হাতে তুলে দেয়, টাকা দুটোও দেয়। বলে, নিয়ে যা ফিরে দে গা ভুবনবাবুকে । বলিস, মদন তঁাতি যেদিন গামছা বুনবে - একটু বেলা হতে তীতি পাড়ায় অর্ধেক মেয়ে পুরুষ দল বেঁধে মদনের ঘরের দাওয়ার সামনে এসে দাড়ায় । মুখ দেখলেই বোঝা যায় তাদের মনের অবস্থা। রোযে ক্ষোভে কারো চোখে জল এসে পড়বার উপক্রম করেছে । গগন তাতির বোঁটা পৰ্যন্ত নির্বাক হয়ে গেছে।
