পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৫৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিস্থিতি 6) হল দেড় বছরের, গা ভরা ঘায়ে কি কষ্ট ওইটুকু কচি ছেলের । শুনুর বাপিও যদি আসে এই গাড়িতে! বৌটা। তার মরেনি, জলজন্তান্ত বেঁচে আছে মরে যাওয়া উচিত হলেও, তবু যদি এখনি আসে, হঠাৎ কোনো মনের খেয়ালে আসে চার ছ’মাস আসেনি বলে। যদি নিয়ে আসে রেশনের একজোড়া নতুন শাড়ি, রঙীন একটি সায়া, টুকটুকে লাল কি বেগুনি রঙের। আর সস্তা সাদা গোছের ঘি, পাপর, চানাচুর লেবেস্তুস ট্রাক চলে গেল মাটি কঁাপিয়ে। একটা দুটো তিনটে ! ছিড়ে দিয়ে গেল সব স্বপ্ন, মাড়িয়ে দিয়ে গেল সাধ। বুক দুরু দুরু করে ফুলুর । এখানে উনুনের সামনে বসে সে দেখতে পায় বড় প্ৰকাণ্ড জোডা। চাকা ব্লাস্তায় খাদগুলির জল কাদা ছিটিয়ে দিচ্ছে। কানাই। আর নিধুর দুটো ঘর ডিঙ্গিয়ে জল কাদা যেন ছিটকে এসে তার sity G5 (< 42Cr গলা ফাটিয়ে চেচিয়ে পড়ছে পচা বুড়োকে শুনিয়ে। একটা পাখী শিস দিল। এই ঘর ছোয়া আমগাছটার ডালে । আমের সোয়াদ এবারও জিভে লাগিল না, এবারও তিনটে গাছই বুড়ে জমা দিয়েছিল স্নামশরণকে । একটা গাছ রাখি নিজেদের জন্যে, ওই বর্ণচোরার গাছটা, সবুজ-কালো আমগুলিতে যেন মধু পোরা, কি রঙ আর কি মিষ্টি গন্ধ। তা নয়, সবগুলি গাছ বুড়ে জমা দিয়েছিল। নাতিকে পড়াবে, ইস্কুলে পড়াবে । মরণ হয় না । কাঠ কুড়িয়ে ফিরাল বুঝি পিসি, ভিজে কাঠপাতা আজ আর জলছে না। এখনো বেলা আছে, আর খানিকক্ষণ খুঁজে পেতে আর কাটা বেশি শুকনো ডাল, ঝোপটোপ আনা পোষাল না পিসির, দুবেলা খাবার মুখটা আছে। পদী আবার চেচাচ্ছে।” অবেলায় কঁাপিয়ে ঝাপিয়ে জরটা বাড়ছে আবার । আর কঁথা নেই চাপা দেবার । যেমন বুদ্ধি বুড়োর, এত বড় মেয়েকে পার না করে ঘরে রেখে পুষছে। শুনুর বাপেরও যেন কোনো চাড় নেই বোনটাকে পার করবার। পই পই করে সে বলেছে শুনুর বােপকে, ফের এ বর্ষায় জরে পড়লে যা ছিরি হবে মেয়ের, পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের ডগা দিয়ে কেউ আর ছোবে না। তখন। সেরে উঠে ফের একটু মানুষের মত দেখাতে আরও ছ’ মাস এক বচ্ছর। তা কে শোনে কার কথা ! মরে যদি যায় তো অবিখি আর - সেই আশায় আছে নাকি বুড়ো আর শুনুর বাপ ? যাকগে বাবা যাক, তার অত ভাবনায় দরকার কি। নিজের জালাই বলে তার সয় না। দিনরাত শত বিছায় কামড়ায় আর ছোবল Qቫጃ ቐቨርሤ !