পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

→त्र পৃথিবীতে বড় একটা যুদ্ধ বেধেছে খবর পেয়েছিল মধুবনী ও তার আশেপাশের সবাই। বাতাসে বাতাসে খবর ছড়িয়ে গিয়েছিল চারিদিকে। তা যুদ্ধ যদি বোধে থাকে থাকুক, বিলাত দেশে যুদ্ধ বাধবে সেটা আশ্চর্যের কথা কি এমন, গরু শৃয়োর মদ খাওয়া স্লেচ্ছ জাত, রক্ত গরম, মাথা গরম, ওরা তো যুদ্ধ করবেই যখন তখন। হিংস্র পশুর মত ও লালমুখে জাতের পরিচয় কি আর জানতে বাকী আছে কারো। ছাব্বিশ আর পয়ত্রিশ সালে বাপ বালানো গুতোর চোটে মর্মে মৰ্মে টের পেয়েছে সবাই। ওরা যদি হানাহানি কাটাকাটি না করে, করবে। কারা ? এই তো সেদিনও একটি কুরুক্ষেত্র হয়ে গিয়েছিল ওদের নিজেদের মধ্যে। বেশীদিনের পুরানো কথা নয় যে বুড়োদের শুধু মনে থাকবে, যোয়ানদেরও স্পষ্ট মনে আছে সে যুদ্ধের কথা। পুরো একটা যুগ ধরে এরা কি হানাহানি করে মরেনি নিজেদের মধ্যে, সাবাড়ি হয়ে যায়নি বেশীর ভাগ পুরুষ ? মাঝখানে এতদিন যে ওরা যুদ্ধ করেনি। সে তো শুধু এই জন্য যে যুদ্ধ করার পুরুষ ছিল না দেশে। জিনিষ ওজন করা স্থগিত রেখে বাড়ুযে বলে, “কথা তুললে যদি তো বলি শোনো রঘু। লড়াই থামলে সবাই দেখলে কি জানো ? দেখলে৷ দেশ-ভরা শুধু মেয়েলোক, বুড়ী মাঝবয়সী যুবতী কিশোরী সব বয়সের গাদা গাদা মেয়েলোকপুরুষ যে কটা হাতের আঙ্গুলে গোনা যায়, তার আবার আদেক কাণ খোড়া । সর্বনাশ! এ যে জাত শুদ, লোপ পাবার যোগাড়! সবাই মিলে তখন ঠিক করলে বিয়ে টিয়ে তুলে দাও, বল নাচ চালাও । বল নাচ জানো না ? রঘু, গৌর, নিতাই, পচা, সুবলদের অজ্ঞতায় আমােদ পেয়ে বািড়য্যে বেশী করে খ্যা খ্যা করে খানিকটা হেসে ফিট করে একটা বিড়ি ধরিয়ে নেয়। বলে, "বল মানে ফুটবল নয় হে, গর্ত। বল নাচ গৰ্ভ ধারণের নাচ, আমাদের শাস্ত্রে যাকে গর্ভাধান বলে। যেদিন যত মেয়েছেলে মাস কাবারি চান করে, তারা সবাই সেদিন থেকে বল নাচের আসরগুলিতে যায়,- সেদিন থেকে দশদিন, ব্যাস। যে কটা পুরুষ বেঁচেছিল যুদ্ধে, কাণ খোড়া সবশুদ্ধ বলনাচের আসরে থাকে। খানিক নাচানাচি হয়, তারপর-”