পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৬২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভিটে মাটি అ* ছোটলাল। ব্যাপারটা একটু খাপছাড়া লাগছে। অজানা অচেনা যায়গায় গিয়ে এত তাড়াতাড়ি শস্তু মেয়ের বিয়ে দিচ্ছে কেন? রামঠাকুর। নকুড়ের মুঠোর মধ্যে গিয়ে পড়েছে, ওর কি আর নিজের বুদ্ধিতে কিছু করবার ক্ষমতা আছে! যা করাচ্ছে নকুড় । ছোটলাল। কেমন যেন অদ্ভুত মনে হয় লোকটাকে। একদিকে যেমন ভীরু, অন্যদিকে আবার তেমনি এক গুয়ে। আমার কি মনে হয় জানেন ঠাকুরমশায় ? টাকার চেয়ে দশটা গায়ের লোককে জব্দ করার লোভটাই ৷ ওর বেশী। সেই উদ্দেশ্যে মাল লুকিয়ে রেখেছে। ভেবেছিলাম, বুঝিয়ে বললে বুঝবে। কিন্তু ওর মতিগতিই অন্যরকম। মাল ও সহজে ছাড়বে না । রামঠাকুর। তাই মনে হল । ও ভাল করেই জানে আপনি চেষ্টা করলে ওর দোকানদারি বন্ধ করে দিতে পারেন, মাল যেখানে জমিয়ে রেখেছে সেইখানেই সব পচাতে পারেন। শুনে ভরকে ও গিয়েছিল, কিন্তু নৱম কিছুতে হল না । এসব লোক একেবারে ভাঙ্গে, মাচকায় না । ছোটলাল। হয়তো অন্য কথা ভাবছে। দেখা যাক। একটা ব্যবস্থা করতেই হবে । ভেবেচিন্তে সবাই পরামর্শ করে ঠিক করা যাবে। মাল না। সরিয়ে ফেলে সে ব্যবস্থাটা আজ থেকে হওয়া চাই। কাদের, রসুল মিঞাকে কাল সকালে আসতে বোলো তো, মাইতি মশায়ের বাড়ী । কাদের । বলব । ছোটলাল। তোমরাও সবাই এসো। আর এক কথা- বিশেষ দরকারী কথা । নকুড়ের ওপর কোনরকম মারধোর গালাগালি কেউ করবে না। সবাই মনে রেখে ভাই, ওরা যেন হানা দিয়ে অত্যাচার করার কোন অজুহাত না পায়, এটা আমাদের দেখা চাই - যত রাগ হোক, যত গা জালা করুক। বোকের মাথায় কেউ কিছু করব না। আমরা । (ছোটলাল, রামঠাকুর, আর মধু ছাড়া সবাই কলরব করতে করতে চলে যায়) ছোটলাল। আমি ভেতর থেকে আসছি। (ছোটলাল ভেতরে যায় ) মধু। বাক, নিশ্চিন্ত হওয়া গেল। উঠতে বসতে স্বস্তি ছিল না। রামঠাকুর। বেশ স্বস্তি বোধ হচ্ছে নাকি তোমাৱ ? মধু। গা ছেড়ে সবাইকে ফেলে পালাবার কতবড় লোভটা ছিল, বামুন পণ্ডিত