পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

fs জীবন যাপন করবে। ছাত্র । সভায় তবে সে কেন থাকে, কিন্তু করে থাকে ? শোভাযাত্রায় যোগ দেয়, ফুটপাথে বসে পড়ে যতক্ষণ দরকার বসে থাকার সঙ্কল্প নিয়ে ? মত তার বদলায়নি, বিশ্বাস শিথিল হয়নি। জোরের সঙ্গে স্পষ্ট ভাবে শুধু মনে হয়েছে আজ এই বিশেষ অবস্থায় তার মত বা বিশ্বাসের কোন প্রশ্ন আসে না, ও-সব বিষয় বিবেচনা করার সময় এটা নয়। অন্য সময় যত খুন্সী নিষ্ঠার সঙ্গে ও সর্বের মৰ্যাদা রেখে চললেই BBS LqgB DDD SSLOB D BDBD DDS BBDB BLBDD DDD DDB BYK DDD মিলে যা করছে, তাকেও তাই করতে হবে তাতে সংশয়ের কিছু নেই, তর্ক নেই। একটু কৌতুহলের বশে হেমন্ত সভায় দাড়িয়েছিল। এত সীমাহীন দলাদলি, এমন কুৎসিৎ আত্মকলহ যাদের মধ্যে, তারা কি করে একসাথে মিশে সভা করে একটু দেখবে। ছেলেদের বড় একটা অংশ গোল্লায় গেছে। শুধু হৈচৈ, গুণ্ডামি, সিগারেট-টানা, মেয়েদের পেছনে লাগা, শেষে পরীক্ষার হলে চুরি-চামারি, গার্ডের সঙ্গে মারা-মারি, গার্ডকে খুন করা। এ অধঃপতনের কারণ সে জানে। রাজনৈতিক মত্তত এই নৈতিক অধঃপতনের জন্য দায়ী । তার মতকেই সমর্থন করে ছেলেদের মধ্যে এই মারাত্মক দুনীতির প্রসার - নিজের কাজকে অবহেলা করে অকাজ নিয়ে মেতে থাকলে এরকম শৈথিল্য আসতে বাধ্য, ছাত্রই হোক আর যাই হোক তাদের মধ্যে। নিয়মানুবর্তিতাকে চুলোয় পাঠিয়ে, লেখাপড়া তাকে তুলে হৈচৈ হাঙ্গামা নিয়ে মেতে থাকার জন্য রাজনীতি চর্চার চেয়ে ভাল ছুতো আর কি হতে পারে ? উদ্ধৃঙ্খলায় কি মিল হয় ? কি মানে সে মিলের ? শীতের তাজা রোদে উজ্জ্বল দিন । কি তাজা দেখাচ্ছে এদের মুখগুলি, কত উজ্জ্বল সকলের দৃষ্টি । দুঃখ বোধ করেছিল হেমন্ত ? অপচয়ে ক্ষয়ের ছাপ পড়ে না, ভ্ৰান্ত আদর্শ কাবু করে না, এমন যে অফুরন্ত তরুণ প্ৰাণশক্তি আর বিশ্বাস, তার কি শোচনীয় অপব্যবহার । একবার ভেবেছিল হেমন্ত, চলে যায় । কি হবে এদের গরম গরম চীৎকার শুনে ? আর যদি মতভেদ ঘটে, বাদানুবাদ হয়, হাতাহাতি মারামারি আরম্ভ হয়ে যায়, আরও তখন বেশী খারাপ হয়ে যাবে মনটা নিজের চোখে সব দেখে। তার চেয়ে কাল খবরের কাগজে পড়লেই হবে কি হল না হল সভায়। কিন্তু চলে যেতে সে পারেনি । প্ৰদীপ্ত মুখগুলি, নিৰ্ভীক চোখগুলি, আশে পাশের • ছাড়া-ছাড়া কথা ও আলোচনার টুকরোগুলো, সমস্বরে শ্লোগান উচ্চারণের ধ্বনিগুলি এক অনুভূতির এক অদ্ভুত দুরন্তপণা তাকে আটকে রেখেছে। বক্তৃতা যারা দিয়েছে তাদের মধ্যে তিনজন হেমন্তের চেনা। বুকের মধ্যে তোলপাড়া করেছে তার, খানিক বক্তৃতা শুনে বাকিটা এই তিনজন চেনা ছাত্রের নতুন পরিচয় আবিষ্কার করার বিস্ময় ও উত্তেজনায়। চােখে দেখে কানে শুনেও অবিশ্বাস্য, অসম্ভব মনে হয় এখানে ওদের উপস্থিতি, আন্দোলনে অংশ গ্ৰহণ !