পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छि Vrcm রাস্তায় শুয়ে পড়ে যে ছেলেটি মোচড়ামুচড়ি দিচ্ছিল তাকে সরিয়ে নিয়ে যাবার পরেও সেই স্থানটির দিকে কেমন এক জিজ্ঞাসু চোখে চেয়ে থেকে কি যেন ভাবে রজত । এতক্ষণ পাশে বসে আছে, এমন চিন্তিত তাকে নারায়ণ দ্যাখেনি । “দিদি বাকবে নাকি বাড়ি গেলে ? “কেন ? বাকবে কেন ? “কি তবে ভাবছি। এত একমনে ? “কি ভাবছি ? বেশ একটু বিনয়ী, লাজুক ছেলের মতে কথা কয় রাজত, “ভাবছি কি, ওকে নিয়ে কবিতা লিখতে চাইলে কি করে লেখা যায়।’ ‘কাকে নিয়ে ? “ওই যে মোচড়ামোচড়ি দিচ্ছিল ছেলেটা ।” ‘তুমি কবিতা লেখো ? ‘লিখি । ছাপতে দিই না, পরে দেব। দিদি বলে, লিখে লিখে হাত না পাকলে ছাপতে দিতে নেই। আচ্ছা, এরকম করে যদি আরম্ভ করা যায় ? সাদা সওয়ারের প্ৰকাণ্ড ঘোড়া নাচে, বুক পেতে দেয় ছেলেরা খুরের নীচে। নাং, এ হল না। বুক পেতে দেবে কেন ? অতি সখে কাজ নেই। কিন্তু-” রাজত ভাবতে থাকে । আয়োজন দেখে রসুল ভাবে, এবার লাঠি চার্জ হবে। কপালের ডান দিকে পুৱানে ক্ষতের চিহ্নটা চিনচিন করে ওঠে তার। ক্ষতের এ দাগ মিলোবে না কোন দিন, স্মৃতিও নয় । স্মৃতি মিলিয়ে যাবে হয়তো চোখ বোজবার আগেই, ক্ষতের দাগ মিলোবে না যত দিন পৰ্যন্ত কবরে সে মাটিতে পরিণত হয়ে না যায় । ‘এবার লাঠি চার্জ হবে মালুম হচ্ছে আবদুল।” “হবে না কি ? একটা সিগারেট দে। তবে টেনে নি।” ক্ষতটা লাঠির, প্ৰশস্ত কপালের ডান পাশে চুলের ভেতর থেকে ডান চোখের ভুরু পর্যন্ত চিরস্থায়ী ক্ষতের যে দাগটা আছে। মানুষকে বাঁচাতে গিয়ে যে এই পুরস্কার জোটে মানুষের, আজও বিশ্বাস করতে পারে না রসুল। দুর্ভিক্ষের সময় পড়া ছেড়ে দিয়ে সে গায়ে ফিরে গিয়েছিল, কয়েকজনকেও যদি বঁাচাতে পারে। -গায়ের নাম চিরবাগী, জমিদার শ্ৰীচপলাকান্ত বস্তু। গাঁয়ে পৌছবার তিন দিন